ঈদের খুশিই হলো একে অপরের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করা। পুরোনো সম্পর্ক ঝালিয়ে নেয়া। বিশেষ করে রাজনৈতিক অঙ্গনে এর প্রভাব ব্যপক লক্ষণীয়। শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের সাথে তৃণমূল নেতাদের সম্পর্ক স্থাপনের অন্যতম মাধ্যম ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়। বড় বড় নেতারাও সাধারণ মানুষকে ঈদের শুভেচ্ছা জানায় বিভিন্নভাবে। কিন্তু এবার সে ধারায় কিছুটা ভাটা পড়বে। ২’দলের শীর্ষ নেতাদের সিংহভাগই এবার ঈদ করবেন দেশের বাইরে।
তাই এবার ঈদুল আযাহায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে পারছেন না শীর্ষ রাজনীতিকরা। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশের বাইরে থাকায় এ সুযোগ আর হচ্ছে না।
আজ বুধবার জাতিসংঘের ৭০তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এইচ এম মাহমুদ আলী, প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, অর্থ উপদেষ্টা মশিউর রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকিসহ আরো অনেকে।
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ করতে আগেই লন্ডন গেছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশারাফুল ইসলাম।
অন্যদিকে কিছুদিন আগে চোখের চিকিৎসার জন্য লন্ডন গেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও। লন্ডনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ করে দেশে ফিরবেন তিনি। দীর্ঘ ৮বছর পর ছেলে, পুত্রবধু এবং নাতনীদের সঙ্গে ঈদ করার সুযোগ পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
এছাড়া বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এম ওসমান ফারুক, শফিক রেহমান, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, আমির খসরু মাহামুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহামুদ টুকু, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এহসানুল হক মিলনসহ শীর্ষ নেতারা দেশের বাইরে রয়েছেন আগের থেকেই।
প্রতিবার আওয়ামীলীগ এবং বিএনপি প্রধানের পক্ষ থেকে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান থাকলেও শীর্ষ নেতারা দেশের বাইরে থাকায় এবার তা হচ্ছে না। যারাও দেশে রয়েছেন তাদের মধ্যে আওয়ামীলীগের দুয়েকজন শীর্ষ নেতা ঈদে ঢাকায় থাকবেন। বাকিরা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদ করবেন বলে জানা গেছে।
এ দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুর থেকে প্রায় ২ মাস পর চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঈদের দিনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতার সমাধিতে দলীয় কর্মসূচি থাকলেও তিনি এ কর্মসূচিতে থাকছেন না। তিনি চলে গেছেন তার নির্বাচনী এলাকা ঠাকুরগাঁয়ে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে এবার ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় হবে কিনা জানতে চাইলে ‘সে সুযোগ নেই’ বলে জানিয়ে দিয়েছেন দলটির মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদও ঈদে থাকবেন রংপুরে।
দেশের শীর্ষ নেতারা এবার ঈদে দেশে না থাকায় রাজনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা জানতে চাইলে রাষ্ট্র বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘একজন গেছেন জাতিসংঘের অধিবেশনে আরেকজন চিকিৎসার জন্য। তবে রাষ্ট্রপতি তো আছেনই। তিনিও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ নিয়ে রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া হবে বলে আমার মনে হয় না।’