ক্রেতারা বলছেন, গরুর দাম গত বছরের চেয়ে বেশি। বিক্রেতারা বলছেন, বিক্রি আশানুরূপ নয়। দুই পক্ষের বিপরীতধর্মী এমন বক্তব্য শোনা গেলেও গতকাল বুধবার রাজধানীর স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাটগুলোতে বেচাকেনা চলেছে। মাঝেমধ্যে বৃষ্টির বাগড়ায় হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
আগামীকাল শুক্রবার পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদের আগে সর্বশেষ কর্মদিবস ছিল গতকাল। ফলে বিক্রেতাদের আশা ছিল, গতকাল হাটে ক্রেতাসমাগম হবে। কিন্তু দেখা যায়, নগরের একমাত্র স্থায়ী ও সবচেয়ে বড় পশুর হাট গাবতলীতে বলতে গেলে দুপুর পর্যন্ত ছিল ক্রেতার খরা। তবে দুপুরের পর হাটে ভিড় বেড়েছে। অস্থায়ী হাটগুলোতে সকালে ক্রেতা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা ও বিক্রি ২টিই বেড়েছে। হাটগুলোতে প্রচুর গরু। কিন্তু বৃষ্টির কারণে হাটে ক্রেতারা চলাচলে খুব সমস্যায় পড়েন।
মসলা:
জমে উঠেছে মসলার বাজার। ছবিটি সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকা থেকে গতকাল তোলা ষ প্রথম আলোগাবতলী হাটে বেশ কয়েকজন ক্রেতা বললেন, বিক্রেতাদের অনেকে পশুর দাম ধরে রেখেছেন। বেশি দাম হাঁকছেন। বিক্রেতারা হয়তো আজ বৃহস্পতিবারের বেচাকেনা পরিস্থিতি দেখে বিক্রি করতে চান। কয়েকজন ক্রেতা বললেন, দাম এখনো বেশি থাকায় তাঁরা বাজার যাচাই করছেন। দামে না বনলে বৃহস্পতিবারের অপেক্ষায় থাকবেন।
দা-চাপাতি-বটিতে শান দেওয়া:
পশু কোরবানির কাজে ব্যবহার করার জন্য ছুরি ও চাকু শান দেওয়া হচ্ছে। তবে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এই হাটে ক্রেতার ভিড় ছিল না বললেই চলে। দুপুরের পর থেকে ক্রেতা বাড়তে শুরু করে।
গুঁড়ি :
কোরবানির পশুর মাংস কাটার জন্য প্রয়োজনীয় এসব গাছের গুঁড়ির টুকরা। চার থেকে আট ইঞ্চি পুরু করে কাটা গুঁড়িগুলো প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ৩০০ টাকায়। ছবিটি রাজধানীর মিরপুর-১ মাজার রোড থেকে তোলা ষ প্রথম আলো৯০ হাজার টাকায় একটি গরু কেনা কল্যাণপুরের বাসিন্দা সাইফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার গরুর দাম তাঁর কাছে বেশি মনে হয়েছে। গরুর ব্যাপারীরা দাম ছাড়ছেন না।
পাটি :
হোগলাপাতার পাটি বিক্রি হচ্ছে দাম ৬০ থেকে ১২০ টাকা। ছবিটি কুমিল্লার রাজগঞ্জ এলাকা থেকে গতকাল তোলাতবে বিক্রেতারা বলছেন, গরুর পেছনে খরচ বেশি হচ্ছে বলে দামও একটু বেশি। ঝিনাইদহের শওকত আলী ব্যাপারী একটি গরু দেখিয়ে বললেন, গরুটির পেছনে তাঁর সব মিলে খরচ হয়েছে ৯১ হাজার টাকা। কিন্তু এখন পর্যন্ত দাম উঠেছে সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে একটি গরু তিনি ‘লোকসানে’ বিক্রি করেছেন।
অস্থায়ী হাটগুলোতেও ছিল দাম নিয়ে এমন বিপরীত চিত্র। এর মধ্যেও বেচাকেনা হয়েছে। যাঁরা গরু বা ছাগল কিনেছেন, বাড়ি ফেরার সময় তাঁদের মুখে ছিল হাসি। তেমনই একজন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ফারহান। হাট থেকে গরু কিনে বের হওয়ার সময় হাসিমুখে খবরটি ফোনে জানাচ্ছিল কাউকে। ফারহান বলল, এর আগে সে হাটে এলেও এবার প্রথম সে বাবার সঙ্গে পছন্দ করে গরু কিনেছে।