যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা না দিলে টিকফা চুক্তি কার্যকর হবে না বলে প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
জিএসপি সুবিধা দেওয়া-না দেওয়ার কর্তৃপক্ষ ইউএসটিআরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক প্রধান মাইকেল ডিলানির সঙ্গে সচিবালয়ে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের একথা বলেন তোফায়েল।
যুক্তরাষ্ট্রের বহু দিনের দেন-দরবারের পর ২০১৩ সালে তাদের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা কাঠামো চুক্তি (টিকফা) সই করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার।
২০১৩ সালে টিকফা স্বাক্ষরের পর বাংলাদেশের কারখানার শ্রম পরিবেশ নিয়ে অসন্তোষ থেকে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশ (জিএসপি) সুবিধা স্থগিত করে ওবামা প্রশাসন।
জিএসপি ফেরত পেতে তখন বাংলাদেশকে ১৬টি শর্ত বেঁধে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
ইউএসটিআর কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে তোফায়েল সাংবাদিকদের বলেন, তারা স্বীকার করেছেন, যে ১৬টি শর্ত দিয়েছিল সেগুলোর অধিকাংশই আমরা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি এবং শর্ত পূরণে বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নতিতে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে ডিলানি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বাংলাদেশকে দেওয়া শর্তগুলো পূরণ হয়নি। এখনও অনেক কিছু বাকি রয়েছে। ইপিজেডের ভেতরে-বাইরে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার প্রতিষ্ঠার কথাও বলেন তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইপিজেড শ্রমিকরা ট্রেড ইউনিয়ন চায় না।
তারা চট্টগ্রাম ইপিজেড সফর করেছেন। সেখানে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। শ্রমিকরা জানিয়েছে, তারা খুশি। সেখানে নিরাপত্তাজনিত কোনো শঙ্কা নেই।
ইউএসটিআর ইপিজেডের সবগুলো কারখানার ‘শ্রমিক কল্যাণ সমিতি’র সমন্বয়ে একটি ‘অ্যাসোসিয়েশন’ চাওয়ার কথা জানিয়েছে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
জিএসপি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আচরণে ক্ষুব্ধ তোফায়েল বলেন, “আমি তাদের (প্রতিনিধি দল) বলেছি, আমাদের পক্ষে এর চেয়ে বেশি কিছু করা সম্ভব নয়।
‘তাদের বলেছি, জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেওয়া না-দেওয়া এখন তোমাদের সিদ্ধান্তের বিষয়। এটা ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।
তবে ডিলানি সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, জিএসপি স্থগিতের প্রক্রিয়াটি ‘স্বচ্ছ’ এবং ‘সব দেশের ক্ষেত্রে সমানভাবে’ প্রযোজ্য।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার আগে মন্ত্রীর উপস্থিতিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অধিদপ্তর/দপ্তর/সংস্থা প্রধানদের মধ্যে স্ব স্ব সংস্থার বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) সই হয়।
এর ফলে কাজের গতি ও জবাবদিহি বাড়বে বলে মনে করছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জবাবদিহি করতে পারব। প্রতি বছর আমাদের কাজের যে দক্ষতা ও সফলতা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা এর ব্যাখ্যা দিতে পারব এবং তিনিও আমাদের কাজগুলো দেখে যে দায়িত্বগুলো আমাদের উপর অর্পণ করেছেন, সেগুলো মূল্যায়ন করতে পারবেন।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষে জ্যেষ্ঠ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন এবং বিভিন্ন সংস্থা প্রধানরা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।