ফ্রিজ বিক্রির প্রধান মৌসুম কোরবানীর ঈদ। ঈদ এখন দোরগোড়ায়। আর তাই ব্যাপকহারে বিক্রি হচ্ছে ওয়ালটনের ফ্রিজ ও ডিপ ফ্রিজ। বলা চলে ফ্রিজ বিক্রির ধূম পড়ে গেছে। বিশেষ করে ওয়ালটনের বড় ডিপযুক্ত ফ্রস্ট ফ্রিজ এবং ডিপ ফ্রিজ বিক্রি হচ্ছে বেশি। ক্রেতাদের চাপ শামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিক্রেতাদের। তাদের যেন দম ফেলার সময় নেই। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিক্রেতারা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
জানা গেছে, গত বছরের কোরবানীর ঈদের তুলনায় এবার ওয়ালটনের বিক্রির টার্গেট দ্বিগুন। গত বছর ঈদুল আয হাতে পৌনে দুই লাখের মতো ফ্রিজ বিক্রি করেছিল ওয়ালটন। এবার তাদের টার্গেট সাড়ে তিন লাখ ফ্রিজ বিক্রির। বিক্রেতারা জানালেন, আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে।
দেশের বিভিন্নস্থানে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোরবানির পশুর মাংস সংরক্ষণ এবং গরম আবহাওয়ার কারণে এবার ব্যাপকহারে ফ্রিজ বিক্রি হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে ওয়ালটন প্লাজা ও ডিস্ট্রিবিউটর শোরুমগুলোতে দেখা গেছে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। প্রোডাক্ট বিক্রি এবং সরবরাহ করতে বিক্রেতাদের গলদঘর্ম হতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানালেন, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পণ্যের মান আরো উন্নত হওয়ার ফলে দেশের বাজারে ওয়ালটন ফ্রিজের চাহিদা ব্যাপকহারে বাড়ছে।
রাজধানীর বসুন্ধরা সিটিতে ওয়ালটন প্লাজা ম্যানেজার আকরামুজ্জামান অপু জানান,এবার ঈদে নতুন নতুন মডেল, আকর্ষণীয় ডিজাইন ও কালারের রেফ্রিজারেটর এবং ফ্রিজার নিয়ে এসেছে ওয়ালটন। বিক্রিও হচ্ছে ভালো। এর পাশাপাশি টেলিভিশন, মোবাইল ফোন সেট, এসি এবং ওয়ালটন হোম ও কিচেন এ্যাপ্লায়েন্সের বিক্রিও আশানুরূপ।
ওয়ালটনের টাঙ্গাইল প্লাজার ম্যানেজার অনুপ সাহা জানান, শেষ মুহুর্তে ব্যাপকহারে বিক্রি হচ্ছে ওয়ালটনের ফ্রিজ এবং ডিপ ফ্রিজ। তিনি জানান, ওয়ালটন দেশে তৈরি করছে বলে ক্রেতাদের চাহিদা মাথায় রেখে বড় ডিপের ফ্রিজ তৈরি করছে। যা আমদানি করা ফ্রিজে থাকে না। এই ফ্রিজ কিনলে মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের আলাদাভাবে ডিপ ফ্যিজের দরকার হয় না। ফলে গ্রাহকরা ওয়ালটন ফ্রিজের প্রতি বেশি আগ্রহী। ক্রেতারা সব শোরুমে গেলেও শেষ পর্যন্ত কিনছেন ওয়ালটন থেকেই। তিনি আরো জানান, এবার ডিপ ফ্রিজও বিক্রি হচ্ছে প্রচুর। তবে ঈদের আগের দিন এবং আগের রাতে ক্রেতাদের ভীড় সামাল দেয়া কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
টাঙ্গাইল প্লাজায় কথা হলো আকবর হোসেনের সঙ্গে। তিনি ওয়ালটন ফ্রিজ কিনতে এসেছেন। জানালেন, প্রতিবেশী সবার ঘরেই ওয়ালটন ফ্রিজ। ভালো সার্ভিস দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। তাদের পরামর্শে ওয়ালটন ফ্রিজ কিনছি। একই শোরুমে আসা আমেনা বেগম জানালেন, তিনি ওয়ালটনের ফ্রিজ ব্যভহার করছেন। এখন ঈদ উপলক্ষ্যে একটি ডিপ ফ্রিজ কিনতে এসেছেন।
রাজধানীর গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেটে ওয়ালটনের ডিস্ট্রিবিউটর আবাবিল ইলেকট্রনিক্সের ম্যানেজার রাজু আহম্মেদ জানালেন, বেচা-বিক্রি নিয়ে তারা সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, গত ৫ বছরে এতোটা গ্রাহকের চাপ তিনি দেখেন নি। গ্রাহকদের সঙ্গে ভালোমতো কথা বলারও সময় পাচ্ছি না। মেমো, চালান ইত্যাদি লেখা আর ফ্রিজের ডেলিভারি নিয়ে সবাই মহাব্যস্ত।
মালিবাগ প্লাজা ম্যানেজার শামীম আল আজাদ বলেন, আশে পাশের বিভিন্ন শোরুমে ক্রেতারা অন্যান্য ব্র্যান্ডের প্রেডাক্ট দেখেন ঠিকই। কিন্তু কেনার সময় তিনি ওয়ালটনই কেনেন। এটাই আমাদের সফলতা।
ইস্কাটন প্লাজা ম্যানেজার মীর্জা সবুজ জানান, দামে সাশ্রয়ী। মানে সেরা। অনেক কালার-ডিজাইন। এজন্য লোকজন ওয়ালটনকে পছন্দ করেন। বাসা থেকে বের হওয়ার সময়ই লোকজন স্থীর হয়ে আসে যে তিনি ওয়ালটন ফ্রিজ কিনবেন।
চট্টগ্রামে ওয়ালটনের অক্সিজেন মোড় প্লাজা ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম খান বলেন, কুমিল্লা থেকে শুরু করে পুরো চট্টগ্রাম এলাকায় ওয়ালটনের ফ্রিজ চলে একচেটিয়া। এখানকার গ্রাহকদের ওয়ালটন সম্পর্কে কিছু বলার প্রয়োজন হয় না। শুধু ক্রেতাদের ভীড় কীভাবে সামাল দেব সেটা নিয়েই আমরা ব্যস্ত।
চট্টগ্রামের কালুরঘাট এলাকায় ওয়ালটনের ডিস্ট্রিবিউটর লাবিব মার্কেটিং এর ম্যানেজার শাখাওয়াত হোসেন বলেন, কোরবানীর ঈদ হচ্ছে ফ্রিজ বিক্রির প্রধান মৌসুম। যা ভেবেছিলাম তারচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। সামনের দুইদিন আরো ভালো যাবে আশা করি।
ওয়ালটনের আগ্রাবাদ প্লাজা ম্যানেজার মোহাম্মদ শাহীন বলেন, ওয়ালটন এখন বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। পণ্যের উচ্চমানের পাশাপাশি বিক্রয়োত্তর সেবাতে বাংলাদেশে ওয়ালটন সেরা। আইএসও সনদ প্রাপ্ত ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর নেটওয়ার্ক এখন সারা দেশে বিস্তৃত। তাছাড়া ৬ মাসের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি, কম্প্রেসারে ৮ বছরের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি দেয়া হচ্ছে। এমনকি তিন বছরের সহজ কিস্তিতে কেনা যাচ্ছে ওয়ালটন ফ্রিজ। সেরা পণ্য, সেরা সেবা। তার ধারণা এসব বিবেচনায় নিয়েই গ্রাহকরা ওয়ালটন ফ্রিজ কিনছেন।