যে মাত্রায় ক্রিকেট প্রদর্শন হয়েছে তাতে জয়টা যে পাকিস্তান দলেরই প্রাপ্য ছিলো তা বোঝার জন্য ক্রিকেটে বিজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই। চোখের দেখা দেখেই বলে দেওয়া যায়, যাদের জেতার কথা তারা ভালো খেলেই জিতেছে।
পাকিস্তান: ১৯৭ (৫০ ওভার)
বাংলাদেশ: ১১৪ (৪২.২ ওভার)
ফল: পাকিস্তান ৭৩ রানে জয়ী।
খেলাটা যে একপেশে হয়েছে তাও নয়। হালকাপাতলা লড়াইও হয়েছে। বিশেষ করে উভয় দলের বোলিংয়ে একটা প্রতিদ্বন্দ্বীতা ছিলো। পাকিস্তান দলকে ১৮৭ রানে অলআউট করে দিতে পারা ওই বোলিংয়ের কৃতিত্ব। আবার বাংলাদেশ দলকে যে পাকিস্তান দল ১১৪ রানে বেঁধে ফেলেছে তাও ভালো বোলিংয়ের জন্যই। দুইবার বিশ্বকাপ খেলা দলের বিপক্ষে একটি শিক্ষানবিশ দলের পারফরমেন্স এরচেয়ে বেশি আশা করাও দূরাশা।
উপমহাদেশের দল হওয়াতে কন্ডিশন নিয়ে ঝামেলা ছিলো না পাকিস্তানের। শেরেবাংলাজাতীয় স্টেডিয়ামের উইকেট সম্পর্কে বিশদ জ্ঞন রাখারও প্রয়োজন হয়নি। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তান দলটি যে সম্মানজনক স্কোর গড়ে তুলতে সক্ষম হয় তা বিসমা মারুফের ৭৯, কানিতা জলিলের ৩৩ এবং জাভেরি ওয়াদুদের ৩০ রানে ভর করে।
বাংলাদেশের পেস বোলিংটা মারমারকাটকাট না হওয়ায় আক্রমণ ভাগের অগ্রনায়ক হয়ে ছিলেন স্পিনাররাই। খাদিজা তুল কুবরা চার ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়েছেন ১০ ওভারে ৪১ রান দিয়ে। তবে মিতব্যায়ি হিসেবে অধিনায়ক সালমা খাতুনের বোলিংয়ের প্রসংশা করতে হবে। ১০ ওভারে ২৬ রান দিয়ে দুই উইকেট শিকার করেছেন তিনি।
পাকিস্তানের অভিজ্ঞ ব্যাটারদেরকে প্রথম দিকে বড় হয়নি। প্রথম উইকেটে ১১, দ্বিতীয় উইকেটে ৩৭ এবং চতুর্থ উইকেটে সবচেয়ে বেশি ৭৮ রান এসেছে। বিসমা মারুফ এবং জাভেরি খানের চতুর্থ জুটিই মূলত পাকিস্তানের ইনিংসের ভিত এনে দিয়েছে।
বাংলাদেশ দলের ইনিংসের শুরুটা যেভাবে হয়েছিলো তাতে করে ১৯৮ রান তাড়া করে ম্যাচ জেতা অসম্ভব ছিলো না। দুই উইকেটে ৫২ রান তুলেও মিডলঅর্ডারে ধারাবাহিক থাকতে পারেনি। বড় কোন জুটি না হওয়ায় ইনিংস থেমে গেছে ১১৪ রানে। বাংলাদেশের পক্ষে ব্যক্তিগত বড় স্কোর আয়শা আক্তারের ১৯ রান।
স্বাগতিক দলের ইনিংসে ধ্বস নামিয়েছেন অতিথি দলের ডানহাতি অফস্পিনার নিদা রশিদ ৮ ওভারে ২৯ রান খরচায় চার উইকেট শিকার করে। অলরাউন্ডার বিসমা মারুফ ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়ে নিয়েছেন দুই উইকেট। ৬.২ ওভারে ১৬ রান দিয়েছেন তিনি।
১৯৯৭ সাল থেকে ক্রিকেট চর্চা করে পাকিস্তান নারী দল এই পর্যন্ত এসেছে। সেখানে একদশক পরে যাত্রা করে বাংলাদেশ নারী দল যে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে ষষ্ঠ হওয়ার স্বপ্ন দেখছে তা প্রসংশা যোগ্য। পাকিস্তান দল অভিষ্ঠ লক্ষ্যের দিকে একধাপ এগিয়ে গেলো উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক দলকে ৭৩ রানে হারিয়ে। বাংলাদেশের আসল লড়াই সামনে পড়ে আছে। মঙ্গলবার বিকেএসপি মাঠে জাপানকে এবং শুক্রবার একই ভেন্যুতে আয়ারল্যান্ডকে হারাতে পারলে লক্ষ্যে পৌঁছানো অসম্ভব হবে না।