প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, ‘আমি জনগণের কল্যাণেই কাজ করে যাচ্ছি।’ তিনি বিরোধী দলকে দমন, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগও নাকচ করেন।
ব্রিটেনের সংবাদপত্র গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। ঢাকায় দেয়া এই সাক্ষাৎকার গতকাল সোমবার প্রকাশ করে গার্ডিয়ান।
সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার কাজ সাধারণ মানুষের উন্নয়ন। আমার রাজনীতি সাধারণ মানুষের জন্য, নিজের জন্য নয়…। জনগণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আছে। জনগণ চায়, তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ হোক। আমি তাদের সেই চাহিদা পূরণেই কাজ করছি। খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা ও চাকরির ব্যবস্থা করছি।’
২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশ হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান কার্যকর, মানুষও এতে সন্তুষ্ট। তাহলে আপনি কী করে আমাকে বলেন, যে আমি শাসন করছি। আমি শাসন করছি না, জনগণের সেবা করছি।’
২০০৮ সালের নির্বাচনে সরকার গঠনের পর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। বিএনপি ওই নির্বাচন বর্জন করেছিল। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল প্রশ্ন তুলেছিল।
শেখ হাসিনা গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘ওই নির্বাচনে খালেদা জিয়াকে আনতে তিনি নিজে উদ্যোগী হয়ে টেলিফোন করেছিলেন। পাশাপাশি ভোট ঠেকাতে বিরোধী জোটের নাশকতার ঘটনাগুলোও তুলে ধরেন তিনি।’
শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যের গণতন্ত্র চর্চার ধরন বাংলাদেশেও অনুসরণের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘জনগণ যতক্ষণ চায়, আমি (ক্ষমতায়) আছি। তারা যদি না চায়, তাহলে নেই। তবে ক্ষমতায় থাকি বা না থাকি, জনগণের জন্যই কাজ করব এবং তাই করছি।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ না নিয়ে রাজনৈতিক ভুল করেছেন খালেদা। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে তার সরকারের সময় বেসরকারি টেলিভিশন চালুর কথা বলেন।’
যুক্তরাজ্যের গণতন্ত্র চর্চার ধরন বাংলাদেশেও অনুসরণের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা গার্ডিয়ানকে বলেন, “জনগণ যতক্ষণ চায়, আমি (ক্ষমতায়) আছি। তারা যদি না চায়, তাহলে নেই।”
“তবে ক্ষমতায় থাকি বা না থাকি, জনগণের জন্যই কাজ করব এবং তাই করছি,” বলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই পরিবর্তন কে এনেছে? এই আমি, আমিই সেই বন্ধ দুয়ার খুলে দিয়েছিলাম। এখন ৪১টি প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেল, প্রায় ৭০০ সংবাদপত্র। তারা লিখছে, স্বাধীনভাবেই লিখছে। এনজিওগুলো তাদের নিয়ম-নীতির মধ্যেই কাজ করছে।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতির চেয়ারম্যান আতাউর রহমান, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানেরও বক্তব্য আসে।