শিশুদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

শিশুদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিশুদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে। শিশুরাই আগামী দিনে জাতিকে নেতৃত্ব দেবে। তাই, তাদের পড়াশুনার মাধ্যমে বিশ্ব উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।’

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় টুঙ্গিপাড়ার মাজার কমপ্লেক্স মসজিদ প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯২তম জন্মবার্ষিকী ও শিশু সমাবেশ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৪ সালে জাতির পিতা প্রথম শিশুদের জন্য আইন করেছেন। তার অনেক পরে জাতিসংঘ শিশুদের জন্য আইন করেছে। আমরা ২০১১ সালে শিশু নীতিমালা প্রণয়ণ করেছি।’

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা শিশুদের ভালোবাসতেন। তিনি নিজের বইপত্র দরিদ্র শিশুদের দিয়ে দিতেন এবং পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতেন। নিজের খাবার স্কুলের সহপাঠীদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে ভাগ করে খেতেন।’

শিশুদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবন্ধী শিশুদের অবহেলা করবে না। তাদের সাহায্য ও সহযোগিতা করবে। মুরুব্বি ও শিক্ষকদের মেনে চলবে।’

এসময় তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক উপজেলায় শিশু ও তরুণদের জন্য একটি করে খেলার মাঠ বা স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে। লেখাপাড়ার পাশাপাশি প্রতিটি শিশুকে খেলাধুলা ও সাংস্কৃিতক চর্চ্চায় পারদর্শী হতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। শুধু সরকারিভাবে না, প্রতিটি স্কুলে ম্যানেজিং কমিটি ও সমাজের বিত্তবানদের মাধ্যমে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এতে ঝরে পড়া শিশুর সংখ্য কমে যাবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দরিদ্র বাবা-মা যাতে সন্তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে, সে জন্য মাধ্যমিক পর্যন্ত বিনামূল্যে বই দেওয়া হচ্ছে।’

তিনি মার্চ মাসকে ইতিহাসের পাতায় গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বলেন, ‘এ মাসটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান ভাষণ দিয়েছিলেন। এ ভাষণে তিনি বলেছিলেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।” এ ভাষণের মধ্যদিয়ে বাঙালি জাতি অসহযোগ আন্দোলন গড়ে তুলে ছিল। ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তিযুদ্ধে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ মাসেই জাতির পিতার জন্মদিন। ২৬ মার্চ জাতির পিতা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবার এ মাসে আমরা সমুদ্রসীমা নিয়ে বার্মার সঙ্গে মামলায় জয়ী হয়েছি। সমুদ্রে আমরা বাংলাদেশের সমান আর একটি ভূখ- পেয়েছি। শুক্রবার বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ভারতকে পরাজিত করেছে।’

তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সব সদস্যকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আবার আমাদের উপমহাদেশের ক্রিকেট তারকা ভারতের শচীন টেন্ডুলকার এ ম্যাচেই শততম সেঞ্চুরি করে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন, যা কোনো ক্রিকেট খেলোয়াড় এখন পর্যন্ত করতে পারেনি। আমি তাকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে আমরা দেশে নিজেরাই ল্যাপটপ তৈরি করছি। দেশের প্রতিটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের জন্য কম্পিটার দেওয়া হবে। আমরা প্রতিটি ইউনিয়নে কম্পিউটার দিয়ে তথ্য সেবা কেন্দ্র খুলেছি।’

বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সভাপত্বি করে গোপালগঞ্জ সরকারি বীনাপানি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণী শিক্ষার্থী শ্রেয়সী বিশ্বাস।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিশু সৌরভ পাল শুভ।’

প্রধানমন্ত্রী পরে দর্শক সারিতে বসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। তিনি শিশুদের জন্য রচিত বইয়ের মোড়কও উম্মোচন করেন।’

পরে একই স্থানে তিনি ৩ দিনব্যাপী বই মেলার উদ্বোধন করেন এবং মেলায় অংশ নেওয়া স্টলগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেন।

বাংলাদেশ রাজনীতি