হাতের মুঠোয় এবার আইওএস ৯। আরও বেশি সার্চের সুবিধে, নিখুঁত প্রাইভেসি কন্ট্রোল এবং আগের চেয়ে ঢের স্মার্ট পার্সোনাল অ্যাসিসট্যান্ট— সব মিলিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে অ্যাপেলের নতুন জাদু ‘আইওএস ৯’। অ্যাপল-এর নয়া অপারেটিং সিস্টেম। সান ফ্রান্সিসকোর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ডেভেলপার্স কনফারেন্সে এর পরই বাজারে এসেছে এই নতুন ওএস আপডেট।
কীভাবে আপডেট করবেন আইওএস ৯? আইওএস ৯ ডাউনলোড করতে আইফোন বা আইপ্যাডে ১.৩ জিবি জায়গা ফাঁকা থাকতে হবে। আইফোন ৪ এস এবং এর পরে বাজারে আসা আইফোন, আইপ্যাড ২ ও এর পরবর্তী সংস্করণগুলিতেও আইওএস ৯ আপডেট মিলবে। এটি আইপ্যাড মিনির সব মডেল ও পঞ্চম প্রজন্মের আইপড টাচেও ডাউনলোড করা যাবে। আইওএস ৮.৪ চালিত ডিভাইসহগুলিতে আইওএস ৯ ডাউনলোড করে নিতে সেটিংস অ্যাপে যেতে হবে। সেখান থেকে জেনারেল মেনুতে গিয়ে সফটওয়্যার আপডেট করা যাবে। আপডেট দেওয়া হলে ডাউনলোড ও ইনস্টল বাটন পাওয়া যাবে। এই বাটনে ক্লিক করে পাসকোড দিতে হবে। এ ছাড়া অ্যাপলের শর্তে রাজি হতে হবে। আপডেট করার সময় ব্যাটারির চার্জ যেন ৫০ শতাংশের বেশি থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পিসি বা ম্যাক থেকে আইটিউনস দিয়েও আইওএস ৯ আপডেট করে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে আইটিউনস দিয়ে আপডেটের সময় ফোনের ব্যাকআপ রাখা ভালো।
আইওএস ৯-এর চোখ ধাঁধানো কিছু ফিচার-
১. চার্জ ফুরোলেও নো টেনশন
মোবাইল চার্জের বিষয়ে ‘আইওএস ৯’ রীতিমতো দারুণ এক সুবিধা দেবে। লো-পাওয়ার মোডে চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার পরেও প্রায় ৩ ঘণ্টা ফোন ব্যবহার করা যাবে।
২. ঝক্কিবিহীন তল্লাশি
এ বার থেকে আইফোনের সার্চ অপশন সবার প্রথমে মাথায় রাখবে ইউজারের লোকেশনকে। যে জায়গা থেকে সেই মুহূর্তে ফোন ব্যবহার করা হচ্ছে, সবার আগে তার চার পাশের সার্চকে তুলে ধরবে ‘আইওএস ৯’। এতে আর কিছু নয়, অনেকটা সময় বাঁচবে।
৩. প্রাইভেসি প্রায়োরিটি
ব্যক্তিগত দিকটাকে আরও বেশি মজবুত করে তুলবে ‘আইওএস ৯’। ফোনের ডাটা এ বার থেকে আর গ্রাহকের অন্য অ্যাপল আইডি-র সঙ্গে যুক্ত থাকবে না। তার সঙ্গে ফোনটাকে অন্যের নাড়াঘাঁটার হাত থেকে বাঁচাতে থাকবে একটা ৬ ডিজিটের পাসকোড আর পাক্কা দু’ দফার অথেনটিকেশন।
৪. প্রো-অ্যাকটিভ অ্যাসিসট্যান্ট ফিচার
‘আইওএস ৯’-এর প্রো-অ্যাকটিভ অ্যাসিসট্যান্ট ফিচারের কাজটা অনেকটা সার্চ ইঞ্জিনের। এই ফিচার নানা ধরনের অ্যাপস্, কনট্যাক্টস দরকার মতো সাজেস্ট করবে। লাইন করে রাখবে ইউজারের মনের মতো মিউজিক। দরকারি লোকজনকে অ্যাড করার পরামর্শ দেবে ই-মেল থ্রেডে। এমনকী, কখন কোন সময়ে কী কাজ করতে হবে, অনেকটা অ্যালার্মের ধাঁচে জানিয়ে দেবে সেটাও!
৫. ফোনের ভেতর ওয়ালেট
পুরনো ভার্সনের ‘পাসবুক’ ‘আইওএস ৯’-এ এসে আরও যতœআত্তি পেয়েছে। আর পেয়েছে একটা নতুন নাম। ‘পাসবুক’ আর নয়— এ বার থেকে তাকে চেনা যাবে ‘ওয়ালেট’ নামে। স্টোর কার্ড আর বোর্ডিং পাস আগে যেমন থাকত এর ভেতরে, এখনও তেমনই থাকবে। আর সঙ্গে থাকবে লয়্যালটি আর রিওয়ার্ডস্ কার্ডও।
৬. মেপে মেপে ম্যাপ
অবশেষে ‘আইওএস ৯’-এর হাত ধরে আইফোনে ম্যাপের ট্রানজিট ইনফো পাওয়া যাবে। গুগল থেকে আলাদা হওয়ার পরে আই-ফোনের ম্যাপ নিয়ে সামান্য হলেও খুঁতখুঁতুনি দেখিয়েছেন অনেকেই। এ বার থেকে আর সেই সুযোগ দেবে না ‘আইওএস ৯’। ধাপে ধাপে যেমন ট্রানজিট-ইনফো মিলবে, তেমনই থাকবে কিছু দরকারি স্টেশন ম্যাপও।
৭. ছবি দেখার সুবিধা
‘আইওএস ৯’-এর সৌজন্যে এ বার থেকে মনের সুখে ছবি দেখা যাবে। লার্জ ভিউ আর কালেকশন প্যানেলের মধ্যে এগোনো-পিছনোর ঝক্কিটা আর থাকছে না ‘আইওএস ৯’-এ। নতুন ফটো স্ক্রোলারের দৌলতে স্ক্রিনের নীচে টাইমলাইনে ছবিটা টেনে আনলেই হবে!
৮. এক পর্দায় দু’জন
‘আইওএস ৯’ এ বার অ্যনড্রয়েড ফোনের স্প্লিট-স্ক্রিনের সুবিধাটাও নিয়ে এসেছে আই-ফোনে। এ বার থেকে যে কোনও দুটো অ্যাপস্ এক সঙ্গে চালানো যাবে আই-ফোনের পর্দায়।
৯. খবরের দুনিয়া
খবর জানার মজাও এ বার থেকে ‘আইওএস ৯’-এর সৌজন্যে বেশ কয়েক গুণ বাড়তে চলেছে। এর উন্নত নিউজ অ্যাপ একেবারেই ইউজারের মর্জিমাফিক নিউজ পেশ করবে।
১০. ‘সিরি’-র সঙ্গে
‘সিরি’ এ বার আরও কার্যকর হয়ে উঠেছে। ব্যস্ত থাকলে আপনার হয়ে ছোটখাটো হিসেব-নিকেশের কাজও সেরে ফেলবে ‘সিরি’।