জাতীয় সঙ্গীত না গাওয়ায় তোপের মুখে করবিন

জাতীয় সঙ্গীত না গাওয়ায় তোপের মুখে করবিন

ব্রিটেনের বিরোধী লেবার পার্টির নব্য নির্বাচিত নেতা, ঘোরতর বাম রাজনীতিক জেরেমি করবিন asduadaআবারও তোপের মুখে পড়েছেন। এবার তার দেশপ্রেম নিয়েই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। মঙ্গলবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈনিকদের স্মরণে একটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে তিনি যে ঠোট মেলাননি তা নিয়ে সিংহভাগ সংবাদপত্র, রেডিও টিভিতে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
অন্যতম শীর্ষ দৈনিক দি টেলিগ্রাফে আজকের সংস্করণের ব্যানার শিরোনামÑপড়ৎনুহ ংহঁনং য়ঁববহ ধহফ ঃযব পড়ঁহঃৎু অর্থাৎ করবিন রাণী এবং দেশকে অবজ্ঞা করেছেন। ব্রিটেনের জাতীয় সঙ্গীত রাণীর বন্দনা এবং করবিন সবসময়ই রাজতন্ত্রবিরোধী।
একজন রাজনৈতিক জাতীয় সঙ্গীততে গলা মেলালেন কি মেলালেন নাÑ ব্রিটেনের মত একটি আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এখনও কেন তা নিয়ে হৈ চৈ হয়?
লন্ডনের বার্কবেক কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপক ছন্দক সেনগুপ্ত বলেছেন, রাজতন্ত্রের ওপর যে বিশ্বাস ও ভালোবাসা ব্রিটেনের মানুষের আছে সেটার প্রতি আঘাত লেগেছে তার এই জাতীয় সঙ্গীত না গাওয়াতে।
তিনি বলছিলেন ‘যেখানে রাণী এলিজাবেথের দীর্ঘকালীন শাসনের মেয়াদের একটা উৎযাপন হয়ে গেল কিছুদিন আগে সেখানে হঠাৎ করে একজন গলা মেলালেন না সেটা যেন তাদের জাতীয়তাবাদ ও রাজভক্তির যুগপৎ আঘাত লেগেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওনাকে এখনকার সংবাদ মাধ্যম একেবারেই পছন্দ করছে না। লেবার পার্টির ভেতরেও মতানৈক্য বেশি অধিকাংশের। তাই উনি এখন যায় করেন না কেন সব ত্রুটি ও খুত খোজার জন্য মিডিয়া, রাজনীতিক সবাই যেন উদগ্রীব হয়ে রয়েছে।’
কেন করবিনের সব আচরন যাচাই করা হচ্ছে এমন প্রশ্নে সেনগুপ্ত বলছিলেন, ‘করবিনের রাজনীতিটা অনেকেই পছন্দ করছে না। বিশেষ করে তার কয়েকটা বিশেষ মতামত যেমন-উনি রাজতন্ত্রবিরোধী, যুদ্ধবিরোধী, ধনতন্ত্রবিরোধী। তাছাড়া সবসময় বামপন্থী রাজনীতিবিদের ওপর এমন আচরণ হয়েছে। প্রথম সারির রাজনীতিতে চলে আসলেন সে কারণে মূলধারার মিডিয়াতেও একটা টালমাটাল অবস্থা তৈরি হয়েছে। জেরেমি করবিনের সমর্থক যারা তারা পুরো দেশের জনসংখ্যার তুলনায় সংখ্যাগুরু।’
জেরেমি করবিন ব্রিটেনের প্রধান একটি দলের নেতা হয়েছেন তার প্রতি মূলধারার মিডিয়া যদি তার এভাবে সমালোচনা করতে থাকে তাহলে কিভাবে তিনি তার রাজনীতি টেনে নিয়ে যেতে পারবেন বা দলকে কিভাবে নেতৃত্ব দেবেন এমন প্রশ্নে সেনগুপ্ত বলেন, এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে খুব সমস্যায় পরবেন। আমরা যদি এখন থেকে পাঁচ বছরের পরের অবস্থা দেখি প্রচুর সময় আসবে যখন অনেক অনেক ভাবে দেখাতে পারবেন। ওনার রাজনীতি যে শুধুই বিতর্কিত অতিবাম রাজনীতি সেটা নায়। তবে করবিন যদি বর্তমান সরকারের পলিসিগুলো নিয়ে পার্লামেন্টে ভালভাবে বিরোধিতা করতে পারেন বা ভোটে হারাতে পারেন তাহলে হয়ত দেশের অনেক মানুষ তাকে সমর্থন করবে বলে মনে করছেন সেনগুপ্ত।

Featured আন্তর্জাতিক