কোরবানীর মাংস সংরক্ষণের জন্য এবার ব্যাপক হারে বিক্রি হচ্ছে ডিপ ফ্রিজ এবং বড় ডিপযুক্ত সাধারণ ফ্রিজ। বাংলাদেশে উৎপাদনকারী ব্র্যান্ড ওয়ালটনেরই রয়েছে বড় ডিপযুক্ত সাধারণ ফ্রিজ। ফলে এক্ষেত্রে ফ্রিজের বাজারের বিশাল অংশ এখন ওয়ালটনের দখলে।
জানা গেছে, দামে সাশ্রয়ী, অসংখ্য কালার-ডিজাইন ও মডেল এবং সারা দেশে বিস্তৃত আইএসও সনদপ্রাপ্ত সার্ভিস নেটওয়ার্কের কারণে গ্রাহকদের কাছে ওয়ালটনের কদর বেশি। এর বাইরে ৬ মাসের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি, কম্প্রেসারে ৮ বছরের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি সুবিধাসহ তিন বছরের সহজ কিস্তিতে কেনা যাচ্ছে ওয়ালটন ফ্রিজ। ওয়ালটন ফ্রিজে ব্যবহৃত হয়েছে ন্যানো পার্টিকেলযুক্ত উন্নত প্রযুক্তি। এতে কোনো ক্ষতিকর সিএফসি বা এইচসিএফসি গ্যাস নেই। রয়েছে ৮০ শতাংশ বিদ্যুত সাশ্রয়ী এলইডি বাল্ব। শতভাগ কপার কন্ডেন্সার ব্যবহারের ফলে ফ্রিজ হয় দীর্ঘস্থায়ী এবং বিদ্যুত সাশ্রয়ী।
রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং খুলনার কয়েকটি শোরুমে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদ ঘনিয়ে আসায় বেড়েছে ফ্রিজের চাহিদা। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় কোরবানীর ঈদে ডিপ ফ্রিজ বা ফ্রিজারের বিক্রি বেড়ে যায়। প্রধানত কোরবানীর গোসত সংরক্ষণের জন্য কোরবানীর ঈদের আগে ব্যাপক ফ্রিজ বিক্রি হয়। এবার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে ভ্যাপসা গরম। সবমিলিয়ে ফ্রিজ বিক্রির হিড়িক পড়ে গেছে।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের মানুষের ফ্রিজ ব্যবহারের ক্ষেত্রে গত কয়েক বছরে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। এখন প্রায় সবাই পছন্দ করছেন বড় ডিপযুক্ত ফ্রিজ। গোসত, মাছসহ অন্যান্য খাবার সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজের এই ডিপ অংশ বেশি জরুরী। আমদানি করা ফ্রিজে ডিপ অংশ থাকে খুবই ছোট। কিন্তু বাংলাদেশে প্রস্তুত ওয়ালটন ফ্রিজের ডিপ অনেক বড়। ফলে গ্রাহকদের আলাদাভাবে ফ্রিজার বা ডিপ ফ্রিজ কেনার দরকার হয় না।
ওয়ালটনের চট্টগ্রাম অঞ্চলের এরিয়া ম্যানেজার আবু রাফা মো. নাঈম জানান, তাদের ডিপ ফ্রিজ এবং সাধারন ফ্রস্ট ফ্রিজের বিক্রি বেড়েছে আশাতীতভাবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের অনেকেরই দুটি ফ্রিজ কেনার সামর্থ নেই। এজন্য তারা বড় ডিপযুক্ত ওয়ালটন ফ্রিজ বেশি কিনছেন। ফলে একটি ফ্রিজেই তাদের চাহিদা মিটে যাচ্ছে। যাদের সামর্থ আছে তারা ওয়ালটনের ডিপফ্রিজও কিনছেন।
খুলনা অঞ্চলের এরিয়া ম্যানেজার ফারুক হোসেন বলেন, কোরবানীর ঈদটাই ফ্রিজ বিক্রির প্রধান সময়। এবার ইদ নিয়ে ওয়ালটনের আগাম প্রস্তুতি ছিল। চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে। বিক্রিও হচ্ছে আশাতীত। তবে এবার বেশি বিক্রি হচ্ছে ১৯২ লিটারের নতুন মডেলটি।
দেশের প্রধান ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বাজার গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেটে ওয়ালটনের ডিস্ট্রিবিউটর আবাবিল ইলেকট্রনিক্সের ম্যানেজার রাজু আহম্মেদ জানালেন, স্টেডিয়াম পাড়ায় ঈদের আগে ওয়ালটনের ফ্রিজ রীতিমতো হটকেকে পরিণত হয়েছে। ক্রেতারা অন্যান্য ব্র্যান্ডের শোরুমে ঘুরলেও কেনার সময় ওয়ালটনই কিনছেন।
ওয়ালটনের বাড্ডা প্লাজার ম্যানেজার মনির হোসেন জানান, ক্রেতাদের মধ্যে সম্প্রতি নতুন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বড় ডিপের ফ্রিজের দিকে। অন্যান্য ব্র্যান্ডগুলো এখানেই মার খেয়ে যাচ্ছে ওয়ালটনের কাছে। ওয়ালটনের সোসির্ং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের নির্বাহী পরিচালক আশরাফুল আম্বিয়া বলেন, বাংলাদেশের আবহাওয়ায় আর্র্দ্রতা অধিক। ফলে খাবার টাটকা রাখতে ডিপ ফ্রিজের প্রয়োজনও বেশি। খাদ্যমান বজায় রাখার জন্য স্থানীয়ভাবে ডাইরেক্ট কুলিংয়ের ফ্রিজই বেশি উপযোগী। ফলে ডিপ অংশ বড় রেখে ডাইরেক্ট কুলিং বা ফ্রস্ট ফ্রিজ তৈরি ও বিপণনের উপর গুরুত্ব দিচ্ছে ওয়ালটন।
অবশ্য তিনি আরো জানান, দেশ-বিদেশের মার্কেটের জন্য ওয়ালটন নতুন একটি ফ্রিজ তৈরির কারখানা স্থাপন করেছে। সেখানে পরীক্ষামূলক উৎপাদনও শুরু হয়েছে। এখানে তৈরি হচ্ছে অতি উচ্চমানের নো ফ্রস্ট ফ্রিজ। নতুন কারখানায় ১৫ টি মডেলের নন ফ্রস্ট বা নো ফ্রস্ট ফ্রিজ তৈরি হবে। প্রধানত ইউরোপ আমেরিকার মার্কেটকে টার্গেট করে তৈরি হবে ওয়ালটনের নো ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর।