ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ একদিনের সফরে ঢাকা পৌঁছেছেন। ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে পরমাণু সমঝোতার পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চীন সফর শেষে বেইজিং থেকে সরাসরি ঢাকায় এলেন তিনি।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে একটি বিশেষ বিমানে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান জারিফ। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ছাড়াও জাওয়াদ জারিফের স্ত্রী তার সঙ্গে এসেছেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক এবং ঢাকাস্থ ইরানের রাষ্ট্রদূত ড. আব্বাস ভায়েজি দেহনাবি বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান।
ঢাকাস্থা ইরান দূতাবাস জানিয়েছে, আজ বুধবার সকাল থেকে মন্ত্রীর সফরের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। পৌনে ১২টায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যাবেন। দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে তার আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় মাহমুদ আলী তার সম্মানে একটি ভোজের আয়োজন করেছেন। সেখানে তিনি অংশ নেবেন। বিকেলে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের সঙ্গে বৈঠক করতে বঙ্গভবনে যাবেন। সেখান থেকে ফিরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হবেন। হোটেল সোনারগাঁওয়ে কেল পাঁচটা এই সংবাদ সম্মেলনত হবে। ঢাকা সফরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাতেই তেহরানের উদ্দেশে তার ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ সফরকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে ঢাকা। ঢাকা আশা করছে ইরানের সঙ্গে অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, বাণিজ্যিক ও সামরিক সম্পর্ক সামনের দিনগুলোতে আরও শক্তিশালী হবে। পাশাপাশি ইরান থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে পাকিস্তান ও ভারত যে জ্বালানি সরবরাহের চুক্তি করেছে, বাংলাদেশও ওই পাইপলাইনের মাধ্যমে উপকৃত হতে চায়। ইরান এরই মধ্যে বাংলাদেশকে ওই পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি সরবরাহে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে।
এ ছাড়া পাট, চামড়াজাত পণ্য, হস্তশিল্প, প্যাকেটজাত খাবারসহ বাংলাদেশী বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা রয়েছে ইরানে। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে বিশেষ কূটনীতিক তৎপরতা চালাচ্ছে বাংলাদেশ।
এর আগে গত আগস্টে ঢাকায় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আব্বাস ভায়েজি দেহনাবি বলেন, ‘ইরানের ওপর থেকে বৈশ্বিক অবরোধ উঠে যাওয়ায় ইরান-বাংলাদেশ নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে। কেননা, ইরান বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে আগ্রহী। দুই দেশের সম্পর্ক গভীর করতে আমি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেব।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি খুশি ঢাকার সঙ্গে তেহরানের বর্তমান সম্পর্কে। তবে আমি সেটাকে রাজধানী পর্যায়ে না রেখে বিস্তৃত পরিসরে দুই দেশের মানুষের পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। শুধু ঢাকা এবং তেহরানের মধ্যে নয়, বিস্তৃতভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক আগামী দিনে আরও গভীর ও সুপ্রতিষ্ঠিত হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।