আসন্ন ঈদে সাশ্রয়ী মূল্যে এলইডি টিভি বাজারে ছেড়েছে ওয়ালটন। সিআরটি টিভির দামে পাওয়া যাচ্ছে ওয়ালটনের এলইডি টিভি। বাড়ানো হয়েছে ইন্টারনেট ভিত্তিক স্মার্ট টিভির সরবরাহ। ঈদ উপলক্ষ্যে এসেছে নতুন নতুন মডেল। কমেছে দামও। সব মিলিয়ে এলইডি টিভির মতো উচ্চ প্রযুক্তির টেলিভিশন এখন সাশ্রয়ী মূল্যে ক্রেতাদের হাতের নাগালে। মিলছে আইএসও স্ট্যান্ডার্ড বিক্রয়োত্তর সেবা।
সর্বাধুনিক ও অটোমেটিক প্রডাকশন লাইনে তৈরি হচ্ছে ওয়ালটনের এলইডি টেলিভিশন। প্লাস্টিক কেবিনেট, স্পিকার, রিমোট কন্ট্রোল ইউনিট, মাদার বোর্ড এবং প্যানেল প্রডাকশনের জন্য পৃথক পৃথক ম্যানুফাকচারিং লাইন স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে এলইডি টিভি উৎপাদনে বাংলাদেশ যেমন স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করছে; তেমনি নিজস্ব তত্ত্বাবধানে মান নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে। এছাড়া নিজস্ব কারখানায় মৌলিক কাঁচামাল হতে প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রাংশ তৈরি করায় উৎপাদন খরচ কমে এসেছে বহুলাংশে। যার সুফল ভোগ করছেন ক্রেতারা।
জানা গেছে, কুরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে নতুন তিন মডেলের এলইডি টিভি এনেছে ওয়ালটন। এগুলো হলো ২৮, ৩২ এবং ৪০ইঞ্চির নতুন মডেল। এর বাইরে বাজারে ব্যাপক চাহিদার কারণে ১৯ ইঞ্চি, ২৪ ইঞ্চি এলইডি টিভির উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। বিদেশী ব্র্যান্ডগুলোর তুলনায় ওয়ালটনের এসব টেলিভিশনের মান অনেক উন্নত। আমদানিকৃত টেলিভিশনের চেয়ে ওয়ালটন দামেও সাশ্রয়ী। বিদ্যুৎ খরচও হয় কম।
ওয়ালটনের বিপণন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক এমদাদুল হক সরকার জানান, তারা সিআরটি (ক্যাথড রে টিউব) টিভির দামে এলইডি (লাইট এমিটিং ডায়ড) টিভি বিক্রি করছেন। ১৯ ইঞ্চি এলইডি টিভি বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৩ হাজার ৯০০ টাকায়। বর্তমান বাজারে যেখানে সিআরটি টিভির দামও এরচেয়ে বেশি। ২৪ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন ক্রেতারা পাচ্ছেন মাত্র ১৯,৯০০ টাকায়। এছাড়া উন্নতমানের পিকচার কোয়ালিটি সম্পন্ন ২৮ ইঞ্চি, ৩২ ইঞ্চি এলইডি টিভি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে যথাক্রমে ২৫,৩০০ টাকা ও ২৯,৯০০ টাকায়। এছাড়া ওয়ালটন মাত্র ৩৫,৯০০ টাকায় নিয়ে এসেছে ৩২ ইঞ্চি ইন্টারনেট ভিত্তিক স্মার্ট টিভি।
তিনি আরো জানান, বিশ্বের যে কোন ব্র্যান্ডের সঙ্গে প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ নিয়ে তৈরি হচ্ছে ওয়ালটন টিভি। এছাড়া দেশব্যাপী বিস্তৃত আইএসও সনদপ্রাপ্ত সার্ভিস সেন্টারে গ্রাহকরা সহজেই পাচ্ছেন বিক্রয়োত্তর সেবা।
ওয়ালটনের অপারেটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম বলেন, তারা এলইডি টিভির দাম আরো কমানোর চেষ্টা করছেন। নিজস্ব কারখানায় মাদার বোর্ড, প্যানেল, স্পীকার, রিমোট উৎপাদনের মাধ্যমে দাম কমানোর এই প্রচেষ্টা চলছে। ব্যাপকহারে প্রডাকশন শুরু হওয়ায় আগামি কয়েক মাসের মধ্যে ওয়ালটন এলইডি টিভির দাম অনেকাংশে কমিয়ে আনা যাবে বলে তিনি আশাবাদী।
বর্তমানে দেশে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের ঘরে বিনোদনের প্রধান মাধ্যম টেলিভিশন। সরকারের উন্নয়ন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিদ্যুৎ চলে গেছে গ্রামে গ্রামে। যার ফলে বেড়েছে টেলিভিশনের ব্যবহার এবং চাহিদা। অন্যদিকে মানগত পরিবর্তন এসেছে টিভির ক্ষেত্রে। সিআরটি টিভির পরিবর্তে ঘরে ঘরে জায়গা করে নিচ্ছে এলইডি টিভি।
ওয়ালটনের সোর্সিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারি পরিচালক প্রকৌশলী ইসহাক রনি জানান, ওয়ালটন এলইডি টিভির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে লেটেস্ট আইপিএস (ইন প্লেইন সুইচিং) টেকনোলজি প্যানেলের ব্যবহার। ১৭০-১৭৮ ডিগ্রি এ্যাঙ্গেল থেকেও একদম নিখুঁত ও ঝকঝকে ছবি দেখা যায়। ছবি ও শব্দের গুণগতমান নিশ্চিতকরনে ডাইনামিক নয়েজ রিডাকশন, মোশন পিকচার, সর্বোচ্চ ফ্রেম রেট, ডলবি ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম সমৃদ্ধ নিজস্ব ডিজাইনের উন্নত প্রযুক্তির মাদারবোর্ড ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়াও, লিকুইড ক্রিস্টাল ডিসপ্লে, এলইডি ব্যাক লাইট ও বিভিন্ন অপটিক্যাল শিটের সমন্বয়ে তৈরিকৃত এলইডি প্যানেল নিশ্চয়তা দিচ্ছে সর্বোচ্চ রেজ্যুলেশন, কন্ট্রাস্ট রেসিও ও রিফ্রেশ রেটের। এতে নিশ্চিত হচ্ছে স্বচ্ছ, সুন্দর ও জীবন্ত পিকচার কোয়ালিটি।
তিনি আরো জানান, ওয়ালটনে রয়েছে শক্তিশালী গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ। যাতে প্রতিনিয়ত যুগের সাথে তাল মিলিয়ে থিম ডেভলপমেন্ট, প্রোডাক্ট ডিজাইন, মোল্ড ডিজাইন এবং মোল্ড তৈরির কাজ করা হচ্ছে। এছাড়াও দক্ষ প্রকৌশলীদের চেষ্টায় সম্ভব হচ্ছে এলইডি টিভির মাদারবোর্ড এর পিসিবি ডিজাইন ও ড্রইং। যার ফলে ক্রেতাদের চাহিদা ও আগ্রহ অনুযায়ী নিত্য নতুন প্রযুক্তি, বিভিন্ন কালার ও ডিজাইনের ওয়ালটন এলইডি টিভি বাজারে সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে। প্রডাকশন ও কোয়ালিটি কন্ট্রোল বিভাগে ব্যবহৃত হচ্ছে সার্ফেস মাউন্ট টেকনোলজি (এসএমটি), অটোমেটিক অপটিক্যাল ইন্সপেকশন মেশিনসহ আরো বহু আধুনিক ইক্যুইপমেন্ট।
উল্লেখ্য, বাজারে পাওয়া যাচ্ছে ওয়ালটনের ৩২ ইঞ্চি স্মার্ট টিভি। টেলিভিশনের সকল সুবিধার পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্রাউজিং, মোবাইল শেয়ারিং, ওয়াইফাই কানেকটিভিটিসহ কম্পিউটারের সকল সেবা পাওয়া যায় স্মার্ট টিভিতে। নতুন প্রজন্মের ক্রেতাদের আকর্ষণের বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে এই স্মার্ট টিভি।