হুজি থেকে আইএস: বাংলাদেশে বাড়ছে জঙ্গিদের আনাগোনা

হুজি থেকে আইএস: বাংলাদেশে বাড়ছে জঙ্গিদের আনাগোনা

আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থার কাছে খবর রয়েছে, বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা ক্রমশ ডালপালা auosdjiaksm;dlasdছড়াচ্ছে। দেশের ভিতরে জঙ্গিদের নানা গোষ্ঠী তো রয়েছেই, তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আইএস-এর তৎপরতা। একই সঙ্গে দেশের বাইরের জঙ্গিদের বাংলাদেশে এসে আশ্রয় দেওয়ার দাবিও করা হচ্ছে৷সর্বশেষ খবর হল, থাই পুলিশ দাবি করেছে, ব্যাঙ্ককে বিস্ফোরণের মূল চক্রী ইজান চিনা পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছে৷ গত বৃহস্পতিবার থাই পুলিশের এক কর্তারা দাবি করেন, ‘‘বোমা হামলার আগের দিনই ইজান বাংলাদেশে পালিয়ে যায়।” ওই হামলায় ১৪ পর্যটকসহ ২০ জন নিহত হয়৷ তবে এ ব্যাপারে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থা বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এখনো কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি৷
সিরিয়ায় ব্রিটেনের ড্রোন হামলায় নিহত তিনজন ইসলামিক স্টেট বা আইএস জঙ্গির মধ্যে একজন, রহুল আমিনের জন্ম বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলায় বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম৷ যদিও আমিন বড় হয়েছেন স্কটল্যান্ডে৷ অর্থাৎ তিনি একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক৷ আর বাংলাদেশি তরুণদের সরাসরি সিরিয়া গিয়ে আইএস-এ যোগ দেওয়ার খবর দিয়েছে বাংলাদেশের গোয়েন্দারাই৷ তাঁরা জানিয়েছেন, এ রকম অন্তত ৯ জন যুবকের তথ্য রয়েছে তাঁদের কাছে৷ গত বছর আইএস-এর একটি ভিডিওতে বাংলাদেশি কয়েক তরুণের সিরিয়া গিয়ে আইএস-এ যোগ দেওয়ার কথা প্রকাশ করা হয়েছিল৷
অনেক সময় আটক নারী ও শিশুদের আইএস জঙ্গিরা যৌন দাস হিসেবে ব্যবহার করে৷ সম্প্রতি আইএস-এর কবল থেকে পালিয়ে আসা ৪০ জনেরও বেশি ইয়াজিদি নারীর সঙ্গে কথা বলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ নারী ও শিশুদের সঙ্গে আইএস-এর এমন আচরণে নিন্দা জানিয়েছেন সবাই৷বাংলাদেশ থেকে এক তরুণীর আইএস-এ যোগ দেওয়ার জন্য বিমানে ঢাকা ছাড়ার খবরও সংবাদমাধ্যমগুলি প্রকাশ করেছে৷ তার পরিবার তাকে ফেরত আনার জন্য দূতাবাসের মাধ্যমে এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন৷
এইসব তথ্য প্রমাণ করে যে বাংলাদেশে এখন সক্রিয় আইএস৷ তারা সেখান থেকে সদস্য সংগ্রহ করছে৷ এই সদস্য সংগ্রহের কথা স্বীকারও করেছেন গত মে মাসে ঢাকায় আটক হওয়া আইএস-এর ‘বাংলাদেশের সমন্বয়কারী’ আমিনুল ইসলাম বেগ৷ সে গোয়েন্দাদের জানায়, প্রায় ২০ জন যুবক সিরিয়িায় গিয়ে আইএস-এ যোগ দিতে উদগ্রীব৷বাংলাদেশের তরুণদের কেউ কেউ নিজ উদ্যোগে আইএস-এ যোগ দিতে দেশ ছাড়ে৷ গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার মিলিটারি ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) ছাত্র আশেকুর রহমানের সিরিয়ায় আইএস-এ যোগদানের খবর নিয়ে বাংলাদেশে তখন ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়৷ এছাড়াও গত দেড় বছরে পুলিশ বাংলাদেশে অন্তত ৩০ জনকে আইএস-এর সঙ্গে জড়িত বলে আটক করেছে৷

বিশ্বের ধনীতম ১০ কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন
বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে আলোচিত জঙ্গি গোষ্ঠী হলো আনসারুল্লাহ বাংলা টিম৷ তারা ব্লগারদের একের পর এক হত্যা করে আলোচনায় এসেছে৷ নতুন জঙ্গি সংগঠন হিসেবে নাম জানা গিয়েছে আরও দু’টি সংগঠনের৷ সংগঠন দু’টি হল হামজা ব্রিগেড এবং হিলফুল ফুজুল৷ আল কায়েদা থেকে তৈরি হওয়া সুন্নি মুসলমানদের জঙ্গি সংগঠন আইএস৷ সাদ্দাম পরবর্তী সময়ে ইরাকে এবং বাশার আল আসাদের আমলে সিরিয়ায় সুন্নিদের হতাশা থেকেই জন্ম সংগঠনটির৷
বাংলাদেশে এখন মোট ৬টি জঙ্গি সংগঠন নিষিদ্ধ৷ হরকাতুল জিহাদ, জেএমবি, জেএমজেবি, শাহদাৎ-ই-আল হিকমা, হিযবুত তাহরির ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিম৷ এদের মধ্যে হিজবুত তাহরি গত সপ্তাহে ঢাকায় অনলাইন সম্মেলন করেছে৷ ২০০১ সালে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বাংলা বর্ষরণে বোমা হামলার মধ্য দিয়ে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের নাম আলোচনায় আসে৷ বর্তমানে কারাগারে আটক হরকাতুল নেতা মুফতি হান্নান একজন আফগান ফেরত বাংলাদেশি তালিবান৷ এই হরকাতুল জিহাদই ২০০৩ সালের ২১শে আগস্ট ঢাকায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালায়৷ ২০০৪ সালের ১৭ই আগস্ট দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলা চালায় জেমএবি৷ জেএমবি পাকিস্তানের লস্কর-এ-তৈবা এবং আল-কায়দার অনুগামী। ২০১৩ সালে ব্লগার হত্যার মধ্য দিয়ে আলোচনায় আসে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম৷ এর সদস্যরা উচ্চ ও প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত৷ হিজবুত তাহরির সদস্যরাও তাই৷ আর সর্বশেষ বাংলাদেশের জঙ্গিদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে আইএস ‘ট্রেন্ড’৷
সূত্র: কলকাতা 24×7

Featured বাংলাদেশ