স্প্যানিশ লা লিগায় অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের বিরুদ্ধে মেসির জয়সূচক গোলে ২-১ তে জিতেছে বার্সেলোনা। দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমে ম্যাচের ৭৩ মিনিটে সুয়ারেজের পাস থেকে জয়সূচক গোলটি করেন মেসি। লিগের শিরোপা ধরে রাখার মিশনে লুইস এনরিকের দলের এটা টানা তৃতীয় জয়।
শনিবার রাতে ভিসেন্তে ক্যালদেরনে অনুষ্ঠিত ম্যাচে বার্সার শুরুর একাদশে ছিলেন না সদ্য দ্বিতীয় ছেলের বাবা হওয়া মেসি। তবে দলের সেরা তারকাকে ছাড়াই ম্যাচের ১৫ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত বার্সা। কিন্তু বার্সাকে গোলবঞ্চিত করেন অ্যাটলেটিকোর গোলরক্ষক জেন অবলাক। আন্দেস ইনিয়েস্তার পাস থেকে বল পেয়ে গোলপোস্টে শট নিয়েছিলেন ইভান রাকিটিচ। কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার এই মিডফিল্ডারের শট দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন অ্যাটলেটিকোর গোলরক্ষক। এর ২ মিনিট পর অ্যাটলেটিকোকে এগিয়ে দেওয়ার সুযোগ নষ্ট করেন ফার্নান্দো তোরেস।
এরপর ২৫ মিনিটে দ্বিতীয়বারের মতো গোলবঞ্চিত হয় বার্সা। এবার তাদের এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ক্রসবার। রাকিটিচের কর্নার কিক থেকে রাফিনহার মাথা ছুঁয়ে বল আসে লুইস সুয়ারেজের কাছে। লাফিয়ে উঠে দারুণ এক ভলিতে বল জালে পাঠানোর চেষ্টা করেছিলেন উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার। কিন্তু বল ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে।
৩৬ মিনিটে আরেকটি ভালো আক্রমণ করে বার্সা। সুয়ারেজকে লম্বা পাস দেন বার্সার ফরাসি ডিফেন্ডার জেরমি ম্যাথিউ। দ্রুত ছুটে গিয়ে সুয়ারেজ বল বাড়ান নেইমারকে। বল পেয়ে অ্যাটলেটিকোর দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে শট নিয়েছিলেন নেইমার। কিন্তু অ্যাটলেটিকোর ডিফেন্ডার জিমিনেজ শুয়ে পড়ে নেইমারের শট প্রতিহত করেন। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে কেউই আর তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। ফলে গোলশূন্য স্কোরলাইন নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বার্সা সমর্থকদের হতাশায় ডুবিয়ে অ্যাটলেটিকোকে ১-০ গোলে এগিয়ে দেন তোরেস। ৫২ মিনিটে সতীর্থ থিয়াগোর পাস থেকে বার্সা গোলরক্ষক টের স্টেগেনকে ফাঁকি দেন এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। অবশ্য স্বাগতিকদের এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। তিন মিনিট পরেই ফ্রি-কিকে দুর্দান্ত এক গোল করে বার্সাকে ১-১ সমতায় ফেরান নেইমার। ডান পায়ের কোনাকুনি শটে বল জালে জড়ান ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। অ্যাটলেটিকো গোলরক্ষক অবলাক ঝাঁপিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি।
ম্যাচের ৬০ মিনিটে রাকিটিচকে উঠিয়ে মেসিকে মাঠে নামান বার্সা কোচ লুইস এনরিক। ৬৭ মিনিটে মেসির পাস থেকে নেইমার নিজের দ্বিতীয় গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন। বক্সের ভেতর বল পেয়ে অ্যাটলেটিকো গোলরক্ষক অবলাককে ফাঁকি দিয়েছিলেন নেইমার। কিন্তু বলটি পোস্টের সামনে থেকে ফিরিয়ে দেন দিয়েগো গডিন। যদিও বল তার হাতে লেগেছিল। বার্সার খেলোয়াড়েরা পেনাল্টির আবেদনও করেছিলেন। কিন্তু রেফারির মন গলেনি।
বদলি হিসেবে মাঠে আসা মেসিই বার্সাকে ২-১ গোলে এগিয়ে দেন ম্যাচের ৭৭ মিনিটে। বক্সের ভেতর সুয়ারেজকে পাস দিয়েছিলেন জরদি আলবা। সুয়ারেজ আবার বল বাড়ান মেসিকে। অ্যাটলেটিকো গোলরক্ষকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন মেসি। আর্জেন্টাইন তারকা গোলটি যে নতুন অতিথিকে (দ্বিতীয় পুত্র) উৎসর্গ করলেন, সেটা তার উদযাপনই বলে দেয়। বৃদ্ধাঙ্গুল চুষে গোল উদযাপন করেন মেসি। শেষ পর্যন্ত মেসির ওই গোলেই অ্যাটলেটিকোর মাঠে তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করে বার্সা।
এই জয়ে তিন ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে আছে বার্সেলোনা। সমান ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ৬ পয়েন্ট নিয়ে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের অবস্থান ষষ্ঠ।