সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে সমতায় ফিরেছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। গতকাল শুক্রবার সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে ৩ উইকেটের জয় পেয়েছে ইংলিশরা। ফলে দুই দলের মধ্যকার ৫ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে বর্তমানে ২-২ সমতা বিরাজ করছে।
শুক্রবার লিডসের হেডিংলিতে অস্ট্রেলিয়ার বেঁধে দেয়া ৩০০ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি ইংল্যান্ডের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই অসি পেসার প্যাট কামিন্সের বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে ‘ডাক’ মেরে ফেরেন অ্যালেক্স হেলস। তবে দ্বিতীয় উইকেটে জেসন রয় ও জেমস টেলর মিলে ৭২ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন। ৩৬ রান করা রয়কে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন কামিন্স। একটু পর ৪১ রান করা টেলরকে বিদায় করেন মিচেল মার্শ।
এরপর চতুর্থ উইকেটে বেন স্টোকসকে সঙ্গে নিয়ে ৯১ রানের বড় জুটি গড়েন মরগান। ৪১ রান করে মার্শের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন স্টোকস। সঙ্গীকে হারানোর পর অবশ্য আরো আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন মরগান। জনি বেয়ারস্টোর সঙ্গে মাত্র ৩৭ বলে ৫৮ রানের ঝোড়ো জুটি গড়েন ইংলিশ অধিনায়ক। কামিন্সের বলে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের হাতে ধরা পড়ার আগে ৯২ বলে ৯২ রান করেন মরগান। তার ইনিংসে ছিল আটটি চার ও দুটি ছক্কার মার।
এরপর দলীয় ২৬১ রানে বেয়ারস্টোকে ফিরিয়ে দেন ম্যাক্সওয়েল নিজেই। দলীয় ২৮২ রানে ইংল্যান্ডকে বড় এক ধাক্কাও দেন ওই ম্যাক্সওয়েলই। দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে লিয়াম প্ল্যাঙ্কেটকে বিদায় করেন তিনি। তখনো ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। তবে অষ্টম উইকেটে মঈন আলী ও ডেভিড উইলির ২২ রানের অবিছিন্ন জুটিতে ১০ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা। জন হাস্টিংয়ের বলে বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জয় উপহার দেন উইলি। মঈন ২১ ও উইলি ১২ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে জর্জ বেইলির দায়িত্বশীল ব্যাটিং এবং ম্যাক্সওয়েল ও ম্যাথু ওয়েডের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ২৯৯ রানের লড়াকু পুঁজি গড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। যদিও টস জিতে ব্যাট করতে নেমে তাদের শুরুটাও ভালো ছিল না। ২৫ রানের মধ্যেই ওপেনার জো বার্নস ও অধিনায়ক স্মিথের উইকেট হারায় সফরকারীরা। দলীয় ৩০ রানে আরেক ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ বিদায় নিলে আরো বিপদে পড়ে তারা। তবে চতুর্থ উইকেটে ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে ১৩৭ রানের বড় জুটি গড়ে দলকে বিপদমুক্ত করেন বেইলি। মঈন আলীর বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৬৪ বলে ৮৫ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন ম্যাক্সওয়েল।
এরপর মিচেল মার্শের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ৪৩ রানের জুটি গড়েন বেইলি। তবে প্ল্যাঙ্কেটের একই ওভারে বিদায় নেন দুজন। বেইলি করেন ৭৫ রান আর মার্শের ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান। এরপর দলীয় ২১৫ রানে অভিষিক্ত মার্কাস স্টইনিসের উইকেট হারালেও অষ্টম উইকেটে ৮৪ রানের অবিছিন্ন জুটি গড়ে দলকে লড়াকু পুঁজি এনে দেন ওয়েড ও জন হাস্টিংস। শেষ পাঁচ ওভারে ৬৫ রান তোলেন দুজন। ওয়েড ২৬ বলে ৫০ ও হাস্টিংস ২৬ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে সর্বোচ্চ ৮৫ রান করেন ম্যাক্সওয়েল। তার ৬৪ বলের ঝোড়ো ইনিংসে ছিল ১০টি চার ও ২টি ছক্কার মার। ১১০ বলে ৭৫ রান করেন বেইলি। আর ওয়েড ২৬ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন।
ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন ডেভিড উইলি। এ ছাড়া ২টি করে উইকেট জমা পড়ে মঈন আলী ও লিয়াম প্ল্যাঙ্কেটের ঝুলিতে।
আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে এই দুই দল। সমতা বিরাজ করায় এই ম্যাচের ওপরই নির্ভর করছে সিরিজের ভাগ্য।