গরু পাচার ঠেকাতে গিয়ে বাংলাদেশিদের গরুর মাংস খাওয়া বন্ধ করতে চাইছে বিজেপি!

গরু পাচার ঠেকাতে গিয়ে বাংলাদেশিদের গরুর মাংস খাওয়া বন্ধ করতে চাইছে বিজেপি!

কোরবানির ঈদ আসন্ন। আর এই ঈদে বাংলাদেশে গরুর চাহিদাও সবচেয়ে বেশি থাকে। এই চাহিদা মেটাতে ভারত থেকে গরু আমদানিও করতে হয় বাংলাদেশকে। ইতিমধ্যে গরু পাচার রোধে a8dyausolভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজানাথ সিং এর কঠোর অবস্থানের কারণে বিএসএফ জওয়ানরা বাংলাদেশে গরু পাচার পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার পথে এগিয়ে চলেছে। যার ফলে বাংলাদেশকে মিয়ানমার, ভুটান ও নেপাল থেকে গরু আমদানি করার চেষ্টা করতে হচ্ছে।
অন্যদিকে অবশ্য রপ্তানিতে বাধা না থাকায় বাংলাদেশের গরুর বাজার দখলে নিচ্ছে মিয়ানমার। এর সাথে সাথেই গরু পাচার রোধে কঠোর অবস্থান নিয়ে বিপাকে পড়েছে ভারত নিজেই।ভারতে বছরে প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকার বাজার এখন মিয়ানমার দখল করে নিচ্ছে। এই ৩১ হাজার কোটি টাকার হিসেব খানিকটা এমন।
ভারতে একটি গরু মারা যাওয়ার প্রায় পাঁচ বছর আগেই দুধ দেয়া বন্ধ করে দেয়। আর এই পাঁচ বছর গরুকে খাওয়াতে বা রাখালকে বেতন দিতে এই অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হয়। ইতিমধ্যে প্রায় ২৫ লাখ গরু দুধ দেয়া বন্ধ করে ফেলেছে। গরু বাণিজ্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেলে অতিরক্ত এই ব্যয়ভার বিজেপি সরকারকে নিতে খামার মালিকদের পক্ষ থেকে প্রবল চাপ দেওয়া হচ্ছে।এখন ২৫ লাখ গরুকে অন্তত পাঁচ বছর গো-শালায় রেখে তাদের যতœ করতে হবে এবং তাদের স্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করতে বার্ষিক খরচ হবে ৩১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা।
গত ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজানাথ সিং বিজেপি’র গরু রপ্তানি ও গরুর মাংস বাতিলের অভিযান অন্য এক মাত্রায় নিয়ে যান। তিনি সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে সীমান্ত দিয়ে বিগত কয়েক দশক ধরে চলে আসা গরু পারপার বন্ধ করতে কঠোর নিষোধাজ্ঞা জারি করেন। এই নিষেধাজ্ঞার আগে প্রায় ২৫ লাখ গরু সীমান্ত দিয়ে পার হতো। বাণিজ্য হতো প্রায় এক বিলিয়ন ইউএস ডলারের। আর এই আমদানি হার পতনের কারণে বাংলাদেশে গরুর মাংসের দাম বেড়ে গেছে ৪০ শতাংশ। আসন্ন ঈদুল-আযহা’র কারণে এই দাম আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে, ভারতে ক্ষমতায় আসার পর থেকে বেশ কয়েকটি রাজ্যে গরুর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করেছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। সমগ্র ভারতও একই নিয়ম চালুর জন্য জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপি।
কয়েকদিন আগেই ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং বক্তব্যে জানান, বাংলাদেশিরা যাতে গরুর মাংস খাওয়া ত্যাগ করেন সেজন্য গরু চোরাচালান ঠেকাতে সীমান্তে অতিরিক্ত বিএসএফ সদস্য মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে ভারত সরকার।
সীমান্তে গরু চোরাচালান ঠেকাতে সীমান্তে আরো কঠোর অবস্থানে যেতে বিএসএফ সদস্যদের নির্দেশ দেন তিনি। সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে যাতে গরু যেতে না পারে সেজন্য বিএসএফ সদস্যদের সদা প্রস্তুত থাকতেও নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, সীমান্তে গরু চোরাচালানের বিরুদ্ধে কঠোর টহলব্যবস্থা জোরদার করার পর সম্প্রতি বাংলাদেশে গরুর মাংসের দাম ৩০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই টহল আরো বাড়ানো হলে চোরাচালান সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে বাংলাদেশে গরুর মাংসের দাম ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বেড়ে যাবে। আর দাম বেড়ে বাংলাদেশের মানুষ গরুর মাংস খাওয়া ছেড়ে দেবে।
অপরদিকে একই ভাষনে রাজনাথ সিং বাংলাদেশের সঙ্গে আরো শক্তিশালী বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপরেও জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের আন্তরিক সম্পর্ক রয়েছে। প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে আমরা আরোও শক্তিশালী ও ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।

Featured আন্তর্জাতিক