প্রতিবারই নতুন নোটের চাহিদা বাড়ে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার আগে। এ চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি বছরই বাজারে নতুন নোট সরবরাহ করে। এবারও বাংলাদেশ ব্যাংক আসন্ন কোরবানির ঈদ সামনে রেখে পর্যাপ্ত পরিমাণে নতুন টাকা সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এবার কী পরিমাণ নতুন টাকা সরবরাহ করা হবে তা এখনো নিশ্চিত করা হয়নি। নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে নতুন নোট বিনিময়ের। আর ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। রাজধানীর ১৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ২০টি শাখায় নতুন নোট বিনিময় হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিলসহ সব শাখায় নতুন নোট বিনিময়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এবার একজনে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৭০০ টাকার বিভিন্ন মূল্যমানের নোট বদলিয়ে নিতে পারবেন।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে নতুন নোট বিনিময়ে ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে নতুন টাকা বিনিময়ের আগে মানুষকে কুপন সরবরাহ করা হবে। পরে কুপনের সিরিয়াল ধরে নতুন নোটের বিনিময় হবে। পাশাপাশি নেয়া হবে আঙুলের ছাপ। মূলত দালাল রুখতেই পরীক্ষামূলকভাবে এমন পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা জানিয়েছেন- সাধারণ মানুষের মধ্যে সুষ্ঠুভাবে নতুন নোট বিনিময়ের জন্য প্রথমবার এমন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। নোট নিতে আসা প্রত্যেকের আঙুলের ছাপ রাখা হবে। ফলে একজন লোক সপ্তাহে একদিনের বেশি নতুন টাকা নিতে পারবেন না। এতে নোট নিতে আসা সাধারণের ভোগান্তি কমবে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে নতুন নোট নিতে চারটি কাউন্টার খোলা হচ্ছে। তাছাড়া বিভাগীয় শহর খুলনা ও সিলেটে তিনটি ও অন্য শাখাগুলোতে দুটি করে নতুন নোট বিনিময়ের কাউন্টার রাখা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি বিভাগীয় শহরগুলোর বাণিজ্যিক ব্যাংকেও নতুন নোট পাওয়া যাবে। এবার একজনে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৭০০ টাকার সমপরিমাণ নতুন টাকা বদলিয়ে নিতে পারবেন। এর মধ্যে ২০ টাকার এক প্যাকেট, ১০ টাকার এক প্যাকেট, ৫ টাকার এক প্যাকেট ও ২ টাকার এক প্যাকেট নেয়ার সুযোগ রাখা হচ্ছে। রাজধানীতে যেসব শাখায় নতুন নোট পাওয়া যাবে সেগুলো হলো জনতা ব্যাংকের নিউমার্কেট শাখা ও আবদুল গণি রোড করপোরেট শাখা, ন্যাশনাল ব্যাংকের যাত্রাবাড়ী শাখা, পূবালী ব্যাংকের সদরঘাট শাখা, অগ্রণী ব্যাংকের এলিফ্যান্ট রোড শাখা, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের বনানী শাখা, সাউথইস্ট ব্যাংকের কারওয়ানবাজার শাখা, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা সিটি মার্কেট শাখা, উত্তরা ব্যাংকের চকবাজার শাখা, ওয়ান ব্যাংকের বাসাবো শাখা, আইএফআইসি ব্যাংকের গুলশান শাখা, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড এগ্রিকালচার ইউনিট দক্ষিণখান শাখা, ব্যাংক এশিয়ার পল্টন শাখা, ইসলামী ব্যাংকের শ্যামলী শাখা, ঢাকা ব্যাংকের উত্তরা শাখা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের মোহাম্মদপুর শাখা, রূপালী ব্যাংকের মহাখালী শাখা, বেসিক ব্যাংকের শান্তিনগর শাখা, যমুনা ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখা ও দ্য সিটি ব্যাংকের মিরপুর শাখা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত কোরবানির ঈদে বিভিন্ন মূল্যমানের ২৪ হাজার কোটি টাকা বাজারে ছেড়েছিল। ওই সময় রাজধানীতে ২০ এবং বিভাগীয় শহরে ২৭টি ব্যাংকের শাখায় বিশেষ ব্যবস্থায় নতুন নোট বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।