হাঙ্গেরিতে সার্বিয়া সীমান্তের কাছে পুলিশি বাধা উপেক্ষা হেঁটেই রাজধানী বুদাপেস্টের দিকে অগ্রসর হচ্ছে শরণার্থীরা।
প্রায় তিনশ’ শরণার্থী হাঙ্গেরিতে প্রবেশের জন্য সার্বিয়া সীমান্ত-সংলগ্ন রোজেক গ্রামের একটি শরণার্থী রেজিস্ট্রেশন ক্যাম্পে অপেক্ষা করছিল। বাসের জন্য অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত এসব শরণার্থী ক্যাম্পটি ঘিরে রাখা পুলিশের ফিতা ছিঁড়ে ফেলে। এরপর তারা মহাসড়কের পাশ দিয়ে পায়ে হেঁটেই রাজধানী বুদাপেস্টের দিকে রওনা দেয়। এসব শরণার্থী ‘জার্মানি, জার্মানি’ বলে স্লোগান দিচ্ছিল। এসময় পুলিশ তাদের চারপাশ থেকে ঘিরে রাখলেও কোনো বাধা দেয়নি।
শরণার্থীদের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে হাঙ্গেরি সরকার। তারা শরণার্থীদের আশ্রয় তো দিচ্ছেই না, নিজ সীমানার মধ্য দিয়ে অন্য দেশে যেতেও বাধা দিচ্ছে। তবে সম্প্রতি জার্মানি ও অস্ট্রিয়া শরণার্থী নেওয়ার ঘোষণায় যাতায়াতে কিছুটা নমনীয় হয়েছে তারা।
গত সপ্তাহে রাজধানী বুদাপেস্টের প্রধান আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনটি বন্ধ করে দেয় হাঙ্গেরি। এর ফলে সেখানে অস্ট্রিয়া ও জার্মানি অভিমুখী কয়েক হাজার শরণার্থী আটকা পড়ে। এসব শরণার্থী রেলস্টেশনের বাইরেই দুই রাত কাটিয়ে দেয়। বুধবার তুরস্কের সমুদ্রসৈকতে আইলান নামে এক সিরীয় শরণার্থী শিশুর মৃতদেহ ভেসে আসে। ওই ছবিটি প্রকাশের পর শরণার্থী ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতে শরণার্থীদের জন্য হাঙ্গেরিসংলগ্ন সীমান্ত খুলে দেয় অস্ট্রিয়া। হাঙ্গেরিও স্টেশনে আটকে থাকা শরণার্থীদের বাসে ও ট্রেনে অস্ট্রিয়া পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। এসব শরণার্থীর অধিকাংশেরই গন্তব্য জার্মানি।
দেশটির রেল কোম্পানি জানিয়েছে, সপ্তাহজুড়ে শতাধিক ট্রেনে ২২ হাজার শরণার্থী জার্মানিতে প্রবেশ করেছে।
এদিকে শরণার্থীদের ঠেকাতে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করতে বার বার সমস্যা হওয়ায় সোমবার হাঙ্গেরির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলে প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাসবা হেন্দির সমালোচনা করা হয়। এর পরপরই প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। অরবান তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে তার দল ফিদেসজ পার্টির নেতা ইস্তভান সিমিস্কোকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সার্বিয়া সীমান্তের ১৭৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের জন্য ৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারের বাজেট বরাদ্দ করেছিল হাঙ্গেরি।