‘প্রতিবছর বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি বাজারের পরিমাণ ৬০০ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত ৬ বছরে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে রফতানি আয় ২৫ শতাংশ হারে বেড়েছে। তাই তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে পরবর্তী গন্তব্যস্থল হবে। এশিয়ার বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী করতে সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত তৃতীয় বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট, এশিয়াতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর পক্ষ থেকে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আজ সোমবার বেসিস’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে।
এশিয়ার ফিন্যান্সিয়াল ও ক্যাপিটাল মার্কেট নিয়ে হংকং ভিত্তিক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ফিন্যান্স এশিয়া’র আয়োজনে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এই সামিটে বাংলাদেশের আইসিটি খাতের বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে তুলে ধরেন বেসিস-এর সভাপতি শামীম আহসান। সামিটে আমন্ত্রিত মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক হিসেবে ‘ডেভেলপমেন্ট ইন দ্য আইসিটি সেক্টর’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি কিভাবে বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টর এগিয়ে যাচ্ছে, বিনিয়োগকারীদের সম্ভাবনা ও সুযোগ কি তা সবাইকে জানান। পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
বেসিস সভাপতি বলেন, সরকার দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন বিবেচনা করে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ভিশন বাস্তবায়ন করছে। দেশে বর্তমানে দেড় হাজারের অধিক সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়া প্রায় অর্ধশত অপশোর ডেভেলপমেন্ট সেন্টার জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি কাজ করছে। যেখানে কর্মরত রয়েছে প্রায় আড়াই লাখ তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবি। তিনি জানান, পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে প্রায় ৭ লাখ ফ্রিল্যান্সার দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে কাজ করছে। যার ফলে প্রতিবছর দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বাজারের পরিমাণ ৬০০ মিলিয়ন ডলার দাড়িয়েছে। গত ৬ বছরে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে রফতানি আয় ২৫ শতাংশ হারে বেড়েছে।
শামীম আহসান বলেন, প্রায় ৬৫ শতাংশ তরুণের বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের হার তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। দেশে বর্তমানে প্রায় ১৩ কোটি মোবাইল ব্যবহারকারী ও প্রায় ৫ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে। স্বল্প খরচ এবং রপ্তানিতে খুব সহজেই প্রবেশগম্যতার কারণে সফটওয়্যার এবং তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট সেবায় বাংলাদেশ একটি পছন্দনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। যে কারণে এক্ষেত্রে রফতানিতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গার্টনার, এটিকার্নি, জেপি মরগ্যান, গোল্ডম্যান সাকস, কোফেস, ইল্যান্স-ওডেস্কসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অনন্য স্বীকৃতি দিয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশ যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের পরবর্তী গন্তব্যস্থল তা এখনই প্রতীয়মান হচ্ছে। তাই বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ এখন অনন্য দেশ। তিনি বলেন, মাইক্রোসফট বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবিরের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বাংলালায়ন কমিউনিকেশনের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, আমরা টেকনোলজিসের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা শরফুল আলম ও আইটিসি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কাজী এস. মুনীর।
প্রসঙ্গত সিঙ্গাপুরের দ্য সেন্ট রেগিস এ অনুষ্ঠিত এ সামিটে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সভাপতি ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক সোবহান, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ (পিপিপি) অফিসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আফসর এইচ উদ্দিন, বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী সদস্য নাভাস চন্দ্র মন্ডল, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবরার এ আনোয়ার, সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান রুবেল আজিজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল আর কে হুসেইন, ডেইলি স্টার এর প্রকাশক ও সম্পাদক মাহফুজ আনামসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও বিভিন্ন প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন।