সময় সকাল সাড়ে ৯টা। একটু পরই এলিট প্লেয়ার্স কন্ডিশনিং ক্যাম্পের জিম সেশন শুরু হবে। বিসিবি একাডেমি ভবনে কয়েকজন ক্রিকেটার চোখ বুলাচ্ছিলেন পত্রিকার পাতায়। একটি পত্রিকায় ‘ক্রিকেটার শাহাদাতের বিরুদ্ধে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ’ বিষয়ক সংবাদে চোখ আটকে গেল ওই সব ক্রিকেটারদের।
রোববার রাতেই ঘটনাটা গোটা বাংলাদেশ জেনে গিয়েছিল। ঘটনা জানতে বাকি নেই শাহাদাতের সতীর্থ ক্রিকেটাররাও। বেশ রাতে ঘটনা বলে অনেক জাতীয় পত্রিকাতেই খবরটা ছিল না। তারপরও শাহাদাত কান্ডের সর্বশেষ সম্পর্কে সবাই জ্ঞাত ছিলেন। সবিস্তারে ঘটনা জানার পর, কেউই শাহাদাতের সমর্থনে কথা বলেননি। বরং নিন্দা, ভৎর্সনায় ধুয়ে দিয়েছেন সতীর্থকে। নির্যাতিত গৃহকর্মী মাহবুবা আক্তার হ্যাপির শারীরিক দুরাবস্থার চিত্র আহত করেছে দেশবাসীর মতো ক্রিকেটারদেরও।
সোমবার বিসিবির বারান্দায় আলোচিত বিষয় ছিল শাহাদাত হোসেন রাজীবের গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনা। ক্রিকেটার, বিসিবির কর্মকর্তা, সাংবাদিক, ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সবাই বিস্মিত হয়েছেন জাতীয় দলের এই ক্রিকেটারের কাজে। পরিচিত মানুষগুলোই চিরচেনা এই ক্রিকেটারকে নিন্দায় ভাসিয়েছেন। ১১ বছরের গৃহকর্মী হ্যাপির শরীরে নির্যাতনের ক্ষত চিহ্ন দেখে কেউ কেউ শাহাদাত ও তার স্ত্রীকে ‘অমানুষ’ বলেও অ্যাখ্যায়িত করেছেন।
পরে বিসিবির সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজনও জানিয়েছেন, এ ঘটনায় বিব্রত বিসিবি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “একজন সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে এ ধরনের আচরণ ওর কাছে প্রত্যাশিত নয়। এ ধরনের কাজে আমরা বিব্রত।”
বিসিবি এ ঘটনায় শাহাদাতের পাশে দাঁড়াবে কিনা জানতে চাইলে নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, “সাপোর্ট দেয়ার বিষয় না। আমাদেরকে তো বিষয়টা আগে বুঝতে হবে, জানতে হবে। এই বিষয় নিয়ে আমরা বিব্রত। আগের ওর কাছ থেকে বিষয়টা জানি। ওর বক্তব্যটা কী এই বিষয়ে। এটা শুধু ওর ভাবমূর্তি না বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলোয়াড় সম্পর্কে বাজে বার্তা যাচ্ছে। সবার মাঝে যেন এই বোধটা থাকে, খেলোয়াড়দের কাছে এটা আমাদের কাম্য। শুধু শাহাদাত নয় সবার কাছে। সে একটা দেশকে প্রতিনিধিত্ব করছে। মাশরাফি সাকিবদের সঙ্গে একই দলে খেলে শাহাদাত। পার্থক্য খুব একটা নেই, জাতীয় ক্রিকেটার।”
উল্লেখ্য, গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে শাহাদাত হোসেন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে।