জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন ও তার পত্নী ইউ বান সুন তায়েকের মঙ্গলবার সকালে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার মোবারকপুরে আগমনের খবরে সেখানকার মানুষের মধ্যে আনন্দ বইছে।
সারা এলাকা জুড়ে রঙিন ফেস্টুন, আনন্দ পতাকা ও বেলুন উড়াসহ মহাসচিবকে নিয়ে আসা হেলিকপ্টারটি অবতরণের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে হ্যালিপ্যাড।
মহাসচিবের সফরসূচিকে সফল ও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন, র্যাব ও ঢাকা থেকে আগত স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) কাজ করছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগসহ এনজিও সংস্থার পক্ষ থেকেও সফরসূচিকে সফল করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘের অর্থায়নে কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্পের কাজ চলছে মৌলভীবাজার, জামালপুর, নড়াইল ও ঠাকুরগাঁও জেলায়। মাঠ জরিপে মৌলভীবাজারের কার্যক্রম সন্তোষজনক বলে বিবেচিত হয়েছে। কার্যক্রমের ফলস্বরূপ চলতি বছরের ১৭ জুলাই টিলাগাঁও ইউনিয়নের পাল্লাকান্দি গ্রামের পিয়ারুন বেগম বিনা অস্ত্রপচারে সন্তান প্রসব করেন। ক্লিনিকের নবজাতক স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মসূচি (এমএনএইচ) রেহানা বেগমের চেষ্টায় এই সন্তান প্রসব সম্ভব হয়েছে বলে ক্লিনিকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। তাই কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্প পরিদর্শনে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন মোবারকপুর আসছেন।
মোবারকপুর সেজেছে নতুন সাজে: বান কি মুনের আগমনকে ঘিরে মোবারকপুর গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই আনন্দ উৎসব চলছে সপ্তাহ জুড়ে। রঙিন ফেস্টুন, আনন্দ পতাকা ও বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে রাস্তার দু’পাশ। ক্লিনিকে সংস্কার কাজসহ রাস্তার দু’পাশের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়েছে। রাস্তার খানাখন্দ ও বড় গর্তগুলো ভরাট করে কার্পেটিংয়ের কাজ করা হয়েছে। ক্লিনিকে নতুন রঙ, বিদ্যুৎ সংযোগ, পানির ব্যবস্থাসহ আনুষাঙ্গিক প্রয়োজনীয় কাজ ইতিমধ্যেই শেষ করা হয়েছে।
নিরাপত্তা: সালন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হ্যালিপ্যাড নির্মাণ করাসহ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ৫০ জন পুলিশ সদস্য সোমবার মধ্যরাত থেকে ওই এলাকায় নিয়োজিত রয়েছে। হ্যালিপ্যাডটি পরীক্ষা করার জন্য ১২ নভেম্বর ঢাকা থেকে একটি হেলিকপ্টার এখানে অবতরণ করে। এ সময় জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভূমিদাতার আনন্দ: মোবারকপুর ক্লিনিকের জন্য ৫ শতক জমি দানকারী রজব আলী ও তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আনন্দ বইছে। রজব আলী ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, তিনিসহ এই গ্রামের মানুষ আজ গর্বিত। কারণ এই ক্লিনিকটি বিশ্বের দরবারে ব্যাপক পরিচিতি পাওয়ার পাশাপাশি জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন ক্লিনিক পরিদর্শনে আসছেন। ক্লিনিকটি যাতে আরও বড় হয় সেজন্য তিনি মহাসচিবের উপস্থিতিতে আরও ৫ শতক ভূমি দান করবেন বলে জানান।
যে বাড়িতে উঠান বৈঠক করবেন বান কি মুন: এলাকার হাছনা বেগমের বাড়িতে উঠান বৈঠক করবেন বান কি মুন। কারণ হাছনা বেগম গর্ভবতী নারীদের নিয়ে কাজ করেন। এখানে ৬০ জন হতদরিদ্র গর্ভবতী নারীর স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেবেন মহাসচিব। এছাড়া মহাসচিবের নাম ও পদবি মুখস্থ করার জন্য এনজিওদের পক্ষ থেকে একটি দল গঠন করা হয়েছে।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: হাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, সকল প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। সর্বোচ্চ নিরাপত্তার দিকটি তত্ত্বাবধান করছে ঢাকা থেকে আগত স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)।