সংসদ সদস্যপদ টিকিয়ে রাখতে হলে চলতি দ্বাদশ অধিবেশনেই সংসদে আসতে হচ্ছে প্রধান বিরোধীদল বিএনপিকে।
অধিবেশনের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে সংসদের বাইরে থাকা বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদ হারানোর হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছেন।
এ অবস্থায় আগামী রোববার বা সোমবার বিএনপি অধিবেশনে যোগ দিতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
সংবিধানের ৬৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী স্পিকারের অনুমতি ছাড়া টানা ৯০ কার্যদিবস সংসদে অনুপস্থিত থাকলে সদস্যপদ চলে যাওয়ার বিধান রয়েছে।
বিএনপির সর্বোচ্চ অনুপস্থিত বৃহস্পতিবার ৮৩ দিন পেরিয়ে গেছে। ফলে চলতি অধিবেশন আর ৭ কার্যদিবস বাড়লেই বিএনপিকে সংসদে আসতেই হবে।
আর এ সর্বোচ্চ অনুপস্থিতিতে আছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। চেয়ারপারসনের অনুপস্থিত ৯০ দিন ছুঁই ছুঁই হওয়ার কারণেই দলটিকে সংসদে ফিরতে হচ্ছে। দলের অন্য সংসদ সদস্যদের সর্বোচ্চ গড় অনুপস্থিত ৭৮ কার্যদিবস।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক সংসদ সদস্য জানিয়েছেন, ২৯ মার্চ পর্যন্ত সংসদ অধিবেশনের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে।
এ বিষয়ে স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ বৃহস্পতিবার তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, অধিবেশনের মেয়াদ বাড়ছে। তবে ঠিক কতদিন বাড়ানো হবে সে ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে। কয়েকদিনের জন্য মুলতবি করেও অধিবেশনের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে।
গত ২৫ জানুয়ারিতে শুরু হওয়া এ অধিবেশন ৮ মার্চ শেষ হয়ে যাবে জানার পর বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তারা সংসদ সদস্যপদ নিয়ে চিন্তিত নয়। বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছিলেন, একমাত্র তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল বিল পাসের নিশ্চয়তা দিলেই তারা সংসদে ফিরে আসবেন।
বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, সময় বাড়ানোর বিষয়টি মাথায় রেখে সংসদে ফেরার জন্য প্রয়োজনীয় হোমওয়ার্ক সেরে নিচ্ছে দলটি। দলীয় নির্দেশে গত ৪ মার্চ থেকে সংসদ সদস্যরা ঢাকায় অবস্থান করছেন। বিএনপির সঙ্গে চারদলীয় জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামী এবং বিজেপির সংসদ সদস্যরাও সংসদে যাবেন।
এ বিষয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান বাংলানিউজকে জানান, অধিবেশনের মেয়াদের ওপর নির্ভর করবে আমরা কবে সংসদে যোগ দেবো।
সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ অধিবেশনের ৩০ কার্যদিবসসহ নবম জাতীয় সংসদ অধিবেশনের মোট কার্যদিবস ২৮৪।
এরমধ্যে প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ শরিকরা অনুপস্থিত ২৩৩ দিন। বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া এ সংসদে মাত্র ৬ কার্যদিবস উপস্থিত ছিলেন। ৯০ দিন অনুপস্থিত থাকলে সদস্যপদ শূন্য হয়ে যাওয়ার বিধান থাকায় বিরোধীদল সময়ে সময়ে অধিবেশনে যোগ দিয়ে তাদের পদ রক্ষা করে চলেছেন।
সর্বশেষ অষ্টম অধিবেশনের শেষ কার্যদিবসে চারদলীয় জোটের অধিকাংশ সদস্য সংসদে গিয়েছিলেন।