‘সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ বিশ্ব প্রশংসা পেয়েছে’

‘সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ বিশ্ব প্রশংসা পেয়েছে’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা আর দেশের অভ্যন্তরীণ বৈরীতা সত্ত্বেও আমাদের অগ্রযাত্রা থেমে থাকেনি। বর্তমান সরকারের সময়োপযোগী নানামুখী পদক্ষেপের ফলে আর্থ-সামাজিক সূচকসমূহে ঈর্ষণীয় সাফল্য এসেছে, যা বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে এবং বিশ্ব নেতৃত্বের প্রশংসা পেয়েছে। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের সংজ্ঞা অনুযায়ী স¤প্রতি নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। আজ বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের এম এ হান্নানের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।apskdasldas'das
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রূপকল্প-২০২১ সামনে রেখে বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে অভিযাত্রা শুরু করে। তথ্য ও প্রযুক্তিনির্ভর এবং দারিদ্র্য ও বৈষম্যহীন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে ছিল জাতির স্বপ্ন। তিনি বলেন, ২০০৯-১৪ সময়ে বাংলাদেশে গড়ে জিডিপি পৃবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ১৩ শতাংশ, যেখানে বৈশ্বিক গড় প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ৩ শতাংশ। স্বাভাবিকভাবেই প্রতিকূল বিশ্ব বাস্তবতায় দেশের ব্যতিক্রমী অর্থনৈতিক সাফল্য এবং এর ধারাবাহিকতা আন্তর্জাতিক মহলেরও নজর কেড়েছে। তবে এখানেই জাতীয় উন্নয়ন অগ্রযাত্রা থেমে যাবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৩১৪ মার্কিন ডলার থেকে ১৩ হাজার মার্কিন ডলারে উন্নীত এবং দারিদ্র্য ও অসমতাকে আমরা সমূলে বিনাশ করতে চাই। বাংলাদেশের সমৃদ্ধি এবং দেশের জনগণের জীবনমানের সার্বিক উন্নয়নের স্বপ্নকে সামনে রেখেই আমাদের সকল কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্তি সেই কর্মপ্রচেষ্টায় সাফল্যের স্বীকৃতি। তিনি বলেন, নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি অর্জনসহ সার্বিক ক্ষেত্রে অর্জনে যে বিষয়গুলো নিয়ামক ভূমিকা রেখেছে তা মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হলো- পরিকল্পিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন কৌশল প্রয়োগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নে নিরবচ্ছিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি স¤প্রসারণ, যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন, ভৌত ও সামাজিক অবকাঠামো বিনির্মাণে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, কর্মসৃজন, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতা স¤প্রসারণের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ চাহিদার গতি সচল রাখা।
আওয়ামী লীগ সভানেতী বলেন, এছাড়াও রয়েছে লক্ষ্যভিত্তিক প্রণোদনা প্রদান, কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড বিতরণ, কৃষকের জন্য ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলা, শ্রমবাজার স¤প্রসারণ, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কাউন্সিল গঠন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক স্থাপন, বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন ২০১৩ প্রণয়ন, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ, ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সংস্কার। তিনি বলেন, তাছাড়াও রয়েছে রাজস্ব, মুদ্রা ও বিনিময় হার নীতি যথাযথ সমন্বয়ের মাধ্যমে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ভারসাম্য নিশ্চিত করা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে সরকারি বিনিয়োগ স¤প্রসারণ, নারী বান্ধব কর্মপরিবেশ সৃজন ও উন্নয়ন কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, সর্বোপরি সরকারের জনমুখী ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের সাথে সাধারণ জনগণের একাত্মতা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের মাথাপিছু জাতীয় আয় দাঁড়িয়েছে ১৩১৪ মার্কিন ডলার। ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পরই ২০২১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছিল। আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা এবং ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ফাস্ট ট্র্যাক প্রজেক্ট, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চি করা, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব কার্যক্রম বৃদ্ধি, শিল্পখাতের প্রসার, নতুন শিল্প স্থাপনে প্রণোদনা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ, পর্যটন শিল্পের প্রসার, বাণিজ্য স¤প্রসারণ, বাণিজ্য উদারীকরণ, দক্ষতা উন্নয়ন, অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নারীর অংশগ্রহণ, বহিঃবাজার স¤প্রসারণ, গ্রামীণ অর্থনীতি, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যব¯’াপনা কৌশল এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।

Featured বাংলাদেশ