আজ সকাল থেকে থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। রাজধানীবাসী ঘর থেকে বেরোতে নাজেহাল হচ্ছেন।এই বৃষ্টি আগামী সাতদিন চলতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে গতকালই বলা হয়েছে আজ বুধবারও সারা দেশে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা। এর মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এই বিভাগগুলোর অন্যত্র মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী এবং দেশের প্রায় সর্বত্র হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
জুনের প্রথম সপ্তাহে ঝমঝমে বৃষ্টির মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল এ বছরের বর্ষা মৌসুম। এই মৌসুম বিদায়ও নেবে বৃষ্টি ঝরিয়ে। আগামী সাত দিনও ঢাকাসহ সারা দেশে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। তা কখনো হতে পারে হালকা, কখনো মাঝারি, কখনো ভারী কিংবা অতি ভারী।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদেরা বলেছেন, মৌসুমের শেষভাগেও বঙ্গোপসাগরে এবং দেশের স্থলভাগে মৌসুমি বায়ু সক্রিয়। ফলে বৃষ্টি হচ্ছে নিয়মিত। দুদিন ধরে মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় দেশের অধিকাংশ স্থানে বৃষ্টিপাতও বেড়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ঢাকায় ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ৪২ মিলিমিটারই হয়েছে দুপুর ১২টা থেকে বেলা দেড়টার মধ্যে, মাত্র দেড় ঘণ্টায়। ওই বৃষ্টিতেই রাজধানীর অধিকাংশ এলাকা জলমগ্ন হয়ে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি করে।
এ ছাড়া মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা উত্তর বঙ্গোপসাগরের বিশাল এলাকাজুড়ে গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালা সৃষ্টি করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তার সংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলেও পূর্বাভাসে সতর্ক করা হয়েছে। এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের রেকর্ড অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ৩১৮ দশমিক ২ মিলিমিটার। ঢাকায় এ মাসের স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩০০ দশমিক ৪ মিলিমিটার। মাসের প্রথম দিনেই গতকাল সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় ঢাকায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৪৪ মিলিমিটার। একই সময়ে টেকনাফে ১৪১, কক্সবাজারে ১০৮, হাতিয়ায় ১০৫, সিলেটে ১০২, সন্দ্বীপে ৯৭, চট্টগ্রামে ৭৮, কুতুবদিয়ায় ৭২ ও রংপুরে ৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এ ছাড়া সীতাকুণ্ডে ৩৫, ফেনীতে ৩০, খেপুপাড়ায় ৩০, রাজশাহীতে ২৬ ও দেশের অন্যত্র এর চেয়ে কম বৃষ্টি আবহাওয়া অধিদপ্তরের রেকর্ডভুক্ত হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. শাহ্ আলম বলেন, এ বছর স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত মাসেও (আগস্ট) বেশি হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে ৭ শতাংশ। বৃষ্টিপাতের ধরনও (প্যাটার্ন) এ বছর ভালো। মৌসুমজুড়ে প্রায় দিনই বৃষ্টিপাত হয়েছে। ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশেই কমবেশি বৃষ্টিপাত হবে। মৌসুম বিদায়ের কারণে মাসের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে বৃষ্টি কমে আসার কথা।