ক্রিকেটের অফসিজন চলছে। এলিট প্লেয়ার্স কন্ডিশনিং ক্যাম্পে ক্রিকেটারদের অনুশীলন দেখতে আসা সংবাদকর্মীরা ছাড়া মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে কোলাহল, মানুষের পদচারণ কম।
সাধারণ প্রতিটি আন্তর্জাতিক সিরিজের আগে মানুষের পদভারে ব্যস্ত হয়ে উঠে মিরপু স্টেডিয়াম। সাকিব-মুশফিকদের কোনো আন্তর্জাতিক সিরিজ না থাকলেও মঙ্গলবার কর্মমুখর আবহেই ধরা দিল মিরপুর স্টেডিয়াম। গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের গ্যালারিতে নানা সাজ হচ্ছে। চারপাশে সাউন্ড বক্সসহ অনেক কিছু বসছে। সাইড স্ক্রিণে কাজ চলছে, এক পশলা বৃষ্টির পর মাঠ তৈরির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে গ্রাউন্ডসম্যানরা। ধুয়া-মোছাসহ আনুসাঙ্গিক সব কাজই চোখে পড়ল।
আর ১০টা সিরিজের মতোই আনুষ্ঠানিকতার মঞ্চ তৈরি হচ্ছে। তবে এবারের আয়োজন সত্যিই ব্যতিক্রমী ও অনন্য। প্রথমবারের মতো শারীরিক প্রতিবন্ধী ক্রিকেটারদের নিয়ে শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক টি-২০ টুর্নামেন্ট। যার আয়োজক বাংলাদেশ। বুধবার নতুন ইতিহাস গড়া এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা টুর্নামেন্টের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়েছেন।
৯ দিন ব্যাপী টুর্নামেন্টে অংশ নিবে পাঁচটি দল। অংশগ্রহণকারী দলগুলো হচ্ছে ইংল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও স্বাগতিক বাংলাদেশ। উদ্বোধনী ম্যাচে বুধবার ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার টুর্নামেন্ট উপলক্ষ্যে মিরপুরে অনুষ্ঠিত হয় এক সংবাদ সম্মেলন। টুর্নামেন্টের ট্রফি এবং বাংলাদেশ দলের জার্সি উন্মোচন করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। অংশগ্রহণকারী দলগুলোর অধিনায়করা জানিয়েছেন, টুর্নামেন্টে তাদের লক্ষ্যের কথা। ট্রফি জয়ের স্বপ্নে বিভোর সবগুলো দল। শারীরিকভাবে সক্ষম ক্রিকেটারদের মতোই ২২ গজের লড়াই, প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রশ্নে অটল দলগুলো।
শারীরিক প্রতিবন্ধী বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক আলম খান বলেন, “অনেক দল আগে থেকেই খেলছে। আমরা ৩-৪ মাস খেলছি। এমন টুর্নামেন্ট হলে আরও খেলোয়াড় বের হবে। তারাও বাংলাদেশ দলে খেলার স্বপ্ন দেখবে।”
শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্রিকেটটা শুরু করেছে ইংল্যান্ড ২০১০ সালে। ইসিবির ডিজেবল্ড ক্রিকেট ম্যানেজার ইয়ান মার্টিনই এর উদ্যোক্তা। হুইল চেয়ারে বসেই তিনি স্বপ্ন দেখেছেন এমন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ইয়ান নারিন বলেন, “খুব ভালো লাগছে এত মানুষের আগ্রহ দেখে। এটা আমাদের জন্য সুযোগ। বিসিবি ও আইসিআরসিকে ধন্যবাদ। আমাদের ভালো প্রস্তুতি রয়েছে। আশা করি ভালো করবো।”
পাকিস্তানের অধিনায়ক হাসনাইন আলম জানিয়েছেন, “আমাদের ভালো প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা তিনটি সিরিজ খেলে এসেছি। আমরা আত্মবিশ্বাসী এই টুর্নামেন্ট জয়ে। পাকিস্তানে ৬০০-৭০০ খেলোয়াড় আছে আমাদের।”
ভারতের অধিনায়ক দিনেশ কুমার বলেন, “আমাদের অবজ্ঞা করা হতো। এটা সব দেশেই। বাংলাদেশে এসে ভালো লাগছে। যেন ঘরেই আছি। বিসিবি ও আইসিআরসিকে ধন্যবাদ এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করায়। আশা করি ক্রিকেট খেলুড়ে সব দেশই এখানে যুক্ত হবে ভবিষ্যতে।”
আফগানিস্তান দলের অধিনায়ক আশরাফ খানও বিসিবি, আইসিআরসিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাদেরকে খেলার সুযোগ করে দেয়ায়। তিনি আশা করেন, টুর্নামেন্টটা সফল হবে। এবং তারা ভালো ক্রিকেট খেলবেন।