মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও এশিয়া থেকে হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে ইউরোপে আসতে থাকায় অস্ট্রিয়া তার সীমান্তে প্রহরা ও তল্লাশী জোরদার করেছে।
কয়েকদিন আগে অস্ট্রিয়ায় একটি পরিত্যক্ত লরির মধ্যে সত্তরেরও বেশি অভিবাসীর মৃতদেহ পাওয়ার পর সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় মানবপাচার ঠেকাতে আকস্মিক তল্লাশী শুরু হয়েছে।
তাদের এ পদক্ষেপের কারণে সৃষ্টি হয়েছে হাঙ্গেরি-অস্ট্রিয়া সীমান্তে ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট।
তবে সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, এর পরও অবৈধপথে আসা শত শত অভিবাসনপ্রত্যাশী হাঙ্গেরি থেকে ট্রেনে করে অস্ট্রিয়া, জার্মানিতে ঢোকার চেষ্টা করছে।
অস্ট্রিয়ায় পরিত্যক্ত একটি লরি থেকে গত সপ্তাহে ৭১ জন অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃতদেহ উদ্ধারের পর দেশটির পূর্ব সীমান্ত দিয়ে যেসব গাড়ি আসছে সেগুলোতে তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে, লোকজনকে লুকিয়ে রাখার মতো যথেষ্ট জায়গা আছে – এরকম গাড়িতে।
দেশটির পুলিশ বাহিনীর প্রধান বলছেন, হাঙ্গেরি থেকে আসা এধরনের গাড়ি থেকে গতরাতেই দুশো জনের মতো অবৈধ অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, পাচারকারীরা এখন আগের তুলনায় আরো অনেক নিষ্ঠুর উপায়ে লোকজনকে পাচারের চেষ্টা করছে।
আর একারণেই তাদেরকে আরো শক্ত হাতে দমন করতে হবে। কর্তৃপক্ষ বলছে, পাচারকারী সন্দেহে পাঁচজনকে পুলিশ আটক করা হয়েছে। পুলিশের প্রধান কনরাড কগড়লার বলছেন, জার্মানী, হাঙ্গেরি এবং স্লোভাকিয়ার মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমেই এসব তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
সংবাদদাতারা বলছেন, তল্লাশি বাড়ানোর কারণে হাঙ্গেরির ভেতরে প্রধান প্রধান সড়কে তিরিশ কিলোমিটারের মতো দীর্ঘ পথে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
অস্ট্রিয়ার এই তল্লাশির কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শেঙ্গেন নীতিমালা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কেন না ওই সমঝোতায় লোকজন অবাধে চলাচল করতে পারে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে এই চলাচলের ওপর কোনো দেশের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করারও বিধান রয়েছে।
অস্ট্রিয়াতে অবৈধ অভিবাসী আসা ঠেকাতে এধরনের কঠোর ব্যবস্থা যখন নেওয়া হচ্ছে তখন ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে হাজার হাজার মানুষ লিবিয়া থেকে ইউরোপে আসার চেষ্টা করছে।
শুধু জুলাই মাসেই ইউরোপের সীমান্তে এসেছে পৌঁছেছে এক লাখেরও বেশি মানুষ।
এই প্রবণতার জন্যে জাতিসংঘ সিরিয়ার সংঘাতকেই বড়ো কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইউরোপের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা দু’সপ্তাহ পরেই এক জরুরী বৈঠকে বসছেন।
সূত্র: বিবিসি বাংলা।