নতুন ব্যাংকের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বৈঠক শেষে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য অধ্যাপক হান্নানা বেগম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘নতুন ব্যাংকের বিষয়ে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। তবে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে।’
একেই রকম ইঙ্গিত দিয়েছেন পরিচালনা পর্ষদের আরেক সদস্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যন ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ।
এছাড়া এবারের বৈঠকে বাংলাদেশের অর্থনীতি, ২০১১-১২ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট, আসছে ২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেট, অনিবাসী বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের মালিকানায় ব্যাংক স্থাপন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণের সুদ মওকুফ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা ও বদলি নীতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার-২০১১ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয় বলেও তারা জানান।
গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ব্যাংকের জন্য আগ্রহী উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে আবেদন চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে যথাযথ প্রক্রিয়া ও শর্ত সাপেক্ষে আবেদন আহ্বান করা হয়ে। এতে আগ্রহীদের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অফেরতযোগ্য ১০ লাখ টাকার জামানতসহ আবেদন করতে বলা হয়।
এ নিয়ে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের জানান, নতুন ব্যাংক দেওয়া হবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে। তিনি সংসদেও বিষয়টি তুলে ধরেন। পরে নমনীয় হয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সর্বশেষ ১৬ সেপ্টেম্বর বোর্ড সভায় নতুন ব্যাংক দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে কোনো ঋণখেলাপী ব্যক্তি যাতে আবেদন করতে না পারেন, এমন শর্ত রাখা হয়েছিলো আবেদনের যোগ্যতায়। চারশ’ কোটি টাকার মূলধন, একজন উদ্যোক্তা সর্বোচ্চ মোট মূলধনের ১০ শতাংশ শেয়ার অধিকারী, বিগত ৫ বছরে খেলাপি থাকলে বা এ বিষয়ক কোনো মামলা আদালতে অনিষ্পত্তি থাকলে তার আবেদন বিবেচনায় না নেওয়া, পরিচালনা পর্ষদে সর্বাধিক ১৩ সদস্য, উদ্যোক্তার আয়কর বিবরণীতে প্রদর্শিত নিট সম্পদ থেকে ব্যাংকের মূলধন সরবরাহ, উদ্যোক্তা বা পরিচালকের সততা ও যোগ্যতা যাচাইসহ আরো বেশি কিছু কঠিন শর্ত বেধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তের আগে সরকার নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে লিখিতভাবে জানায়। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারকে জানিয়ে দেয়, বর্তমান অর্থনীতির আকারে আর কোনো নতুন ব্যাংকের প্রয়োজন নেই। এ অবস্থায় নতুন ব্যাংক দিলে তা ব্যাংকগুলোকে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নিয়ে যাবে।
নতুন ব্যাংক দেওয়ার বিরোধিতা করেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ) দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরাও।