মালয়েশিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। একই সঙ্গে পদত্যাগ করতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি। আজ সোমবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
রাজাকের পদত্যাগের দাবিতে গতকাল রবিবার দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভে উত্তাল ছিল রাজধানী কুয়ালালামপুর। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে ৭০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগে গত শনিবার থেকে দুই দিনের বিক্ষোভ শুরু করে মানবাধিকার সংগঠন বেরসিহ (মালয় শব্দটির অর্থ ‘পরিষ্কার’)। বিক্ষোভে যোগ দেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদও।
মালয়েশিয়ার জাতীয় দিবস উপলক্ষে এক ভাষণে রাজাক বলেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশে মত প্রকাশের ক্ষেত্রে এই ধরনের বিক্ষোভ সঠিক পন্থা নয়।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার মনে রাখা উচিত, ঐক্যবদ্ধ না থাকলে সংহতি ও একতা হারাব।
বিক্ষোভকারীদের প্রতি হুঁশিয়ারিও দেন রাজাক। এর আগে উপপ্রধানমন্ত্রী জাহিদ হামিদি বিক্ষোভের আয়োজকদের শাস্তির আওতায় আনার হুঁশিয়ারি দেন।
গতকাল বিক্ষোভের দ্বিতীয় দিনে সকাল থেকে বিক্ষোভকারীরা পরিকল্পনামতো হলুদ শার্ট পরে কুয়ালালামপুরের ইনডিপেনডেন্স স্কয়ারে নতুন করে জড়ো হতে থাকে। পুলিশ বিভিন্ন সড়কের মুখ অবরোধ করে ওই স্কয়ার ও এর আশপাশে বিক্ষোভকারীদের জড়ো হতে বাধা দেয়।
আয়োজকদের দাবি, নানা বাধা উপেক্ষা করে অন্তত তিন লাখ মানুষ বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, বিক্ষোভকারীর সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার।
পুলিশের কঠোর অবস্থান সত্ত্বেও প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও বিক্ষোভ ছিল শান্তিপূর্ণ। বিক্ষোভকারীরা রাজাকের বিকৃত ছবি, কার্টুন ও তাঁর পদত্যাগের দাবিসংবলিত স্লোগান লেখা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করে।
শনিবার বিক্ষোভের প্রথম দিনেও হাজারো মানুষ রাজপথে নামে। তারা ইনডিপেনডেন্স স্কয়ারে জড়ো হয়ে নাজিব রাজাকবিরোধী নানা স্লোগান দেয়। সন্ধ্যার দিকে বিক্ষোভকারীর সংখ্যা কিছু কমে আসে। রাতেও ওই স্কয়ার ও এর আশপাশে ছিল অনেক বিক্ষোভকারী। রাতে আকস্মিকভাবে বিক্ষোভকারীদের সামনে হাজির হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির। তাঁকে দেখে উল্লাস প্রকাশ করে বিক্ষোভকারীরা। মাহাথির তাদের বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। গতকালও কুয়ালালামপুরের সেন্ট্রাল মার্কেট এলাকায় বিক্ষোভে যোগ দেন মাহাথির। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী নাজিবের পদত্যাগ দাবি করেন তিনি।
মালয়েশিয়ার সরকারি গণমাধ্যমগুলো থেকে জানা যায়, পদত্যাগ না করার অবস্থানে অটল আছেন প্রধানমন্ত্রী নাজিব। তিনি শুরু থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।