১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে নিহত শহীদদের স্মরনে আগামীকাল সোমবার শ্রীরামসী গনহত্যা দিবস। জগন্নাথপুর উপজেলার মীরপুর ইউনিয়নের শ্রীরামসী গ্রামে বেদনা বিধুর স্মৃতি নিয়ে গণহত্যা দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষে উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় শহীদ স্মৃতি সংসদ ও বধ্যভূমি সংরক্ষন কমিটির উদ্যোগে দিনব্যাপী নানান কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে।
শহীদ স্মৃতি সংসদের সভাপতি বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী আব্দুল কাইয়ুম মোশাহিদ জানান, গণহত্যা দিবস উপলক্ষে শ্রীরামসী এলাকায় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কালো ব্যাজ ধারণ, শোক র্যালী, মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা ও বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরনী অনুষ্টানে প্রধান অতিথি হিসেবে জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আকমল হোসেন উপস্থিত থাকবেন।
ইতিহাস সূত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৩১ আগস্ট শ্রীরামসীতে পাক হানাদার বাহিনী শান্তি কমিটি গঠনের লক্ষে এলাকার নেতৃস্থানীয়দের শ্রীরামসী বাজারে জড়ো করে। উপস্থিতিদের মধ্যে বেশীর ভাগ লোক ছিলেন সাধারণ শান্তি প্রিয় মানুষ। পাক-হানাদাররা এ সময় শান্তি কমিটির নাম করে সকলকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পিছ মোড়া দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং একজনকে অন্য জনের সাথে কঠিন বাঁধনে আবদ্ধ করে তার পর নিঃসীম নিরবতাকে খাঁন খাঁন করে দীর্ঘক্ষণ যাবত চলতে থাকে মেশিনগানের আতংকিত উচ্চারন। সারির প্রথম ব্যক্তি শ্রীরামসী হাই স্কুলের মৌলভী শিক্ষক আব্দুল হাই এর সুতীব্র আল্লাহ আকবর ধ্বনি, যেন সকল অসহায় আত্মার করুন বিদায়ের বারতা ঘোষনা করে। পাক-হানাদাররা জন মানবহীন শ্রীরামসী বাজার ও গ্রামের অধিকাংশ ঘরবাড়ি পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দেয়। মুক্তিযুদ্ধের কাল পরে শ্রীরামসীর মানুষেরা শহীদদের স্মৃতিকে গণমানুষের হৃদয়ে চির অনির্বান রাখার দৃপ্ত শপথে শ্রীরামসীতে প্রতিষ্ঠিত হয় শহীদ মিনার ও স্মৃতি সৌধ। যার বুক চিরে উৎকীর্ণ আছে পরিচয় জানা শহীদদের ৩৮টি নাম। গণহত্যার বেদনা বিধুর এ দিনটিকে স্মরন করতে প্রতিষ্ঠিত হয় শ্রীরামসী স্মৃতি সংসদ ও বধ্যভূমি সংরক্ষণ কমিটি। এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, শ্রীরামসি গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহীদদের স্মরণে পুষ্পর্স্তপক অর্পণ করা হবে।