বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়নোর তীব্র সমালোচনা

বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়নোর তীব্র সমালোচনা

সিলেটে বাংলাদেশ সংলাপের প্যানেল সদস্য, বাঁ দিক থেকে: অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম, সঞ্চালক আকবর হোসেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষক ডঃ মুনতাহা রকিব, এবং সিলেট মহানগর বিএনপির সিনিয়র নেতা নাসিম হোসাইনwfasdf
বাংলাদেশে সম্প্রতি বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের যে দাম বাড়ানো হয়েছে তার সমালোচনা করেছেন বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপে অংশ নেয়া দর্শক এবং প্যানেলিস্টরা।
তবে এ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত যুক্তিযুক্ত।
গতকাল শনিবার সিলেট শহরের কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপে এই মূল্যবৃদ্ধি পক্ষে বিপক্ষে তুমুল বিতর্ক হয়েছে।
দর্শকদের প্রায় সবাই বলেছেন বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষের উপর আর্থিক চাপ তৈরি হবে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বিদ্যুতের দাম প্রায় তিন শতাংশ এবং গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষক ডঃ মুনতাহা রকিব বলেন, এই বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর মাধ্যমে সরকার প্রায় চার হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব সংগ্রহ করবে।
কিন্তু তিনি মনে করেন, সরকার চার হাজার কোটি টাকা আয় করলেও দেশের সার্বিক অর্থনীতির উপর প্রায় দশ হাজার কোটি টাকার মত প্রভাব পড়বে, কারণ বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে পণ্যের উৎপাদন খরচ যেমন বাড়বে তেমনি পরিবহন খরচও বেড়ে যাবে।
অনুষ্ঠানের আরেকজন প্যানেলিস্ট সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানী তেলের দাম দুই তৃতীয়াংশ কমার পরেও বাংলাদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোন যৌক্তিকতা নেই।
তিনি বলেন, সরকারের এ দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জনগণের স্বার্থের বিপক্ষে গিয়েছে।
মিঃ ইসলামের সাথে একমত পোষণ করেন সিলেট মহানগর বিএনপির সিনিয়র নেতা নাসিম হোসাইন।
তিনি বলেন বর্তমান সরকারের সময় এ নিয়ে আটবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, “সরকার কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নয়, মানুষের সুবিধা-অসুবিধা সরকারকে বিবেচনায় নিতে হবে।”
মিঃ হোসাইন বলেন, এর আগে যতবারই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে ততবারই বিশ্ববাজারে জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধির দোহাই দেয়া হয়েছে।
কিন্তু এখন বিশ্ববাজারে জ্বালানী তেলের দাম দুই তৃতীয়াংশ কমে যাবার পরেও কেন বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হল সেটি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মিঃ হোসাইন।
তবে সরকার জ্বালানী তেল বিক্রি করে লাভ করছে বলে অনেকেই যে কথা বলছেন সেটিকে নাকচ করে দিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি বলেন, সরকার লোকসান কমাচ্ছে।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন সময়ের সাথে সাথে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচও বাড়ছে।
তিনি বলেন, “কেউই দাম বাড়ানো পছন্দ করে না। সকলেই চায় দাম কমুক।”
কিন্তু বর্তমান সরকার যে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছে সেজন্য অনেক টাকা বিনিয়োগও করতে হয়েছে, তাই সময়ের সাথে সাথে বিদ্যুতের দাম বাড়াটাও স্বাভাবিক বলে তিনি যুক্তি তুলে ধরেন।
মিঃ মান্নান আরও বলেন, “লোডশেডিং কি পূর্বের তুলনায় অনেক কম নয়? আপনারা কি অস্বীকার করতে পারবেন? বর্তমান সরকার বিদ্যুতের উৎপাদন তিন হাজার মেগাওয়াট থেকে টেনে চৌদ্দ হাজার মেগাওয়াটে এনেছে।”
সূত্র: বিবিসি বাংলা।

Featured আন্তর্জাতিক