সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে চড়াও হয়ে তাদের ওপর হামলা করেছে ছাত্রলীগকর্মীরা। আন্দোলনরত অন্তত ৭ জন শিক্ষক সরকার-সমর্থক এই ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের মারধরের শিকার হয়েছেন। আজ রবিবার সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা ছিল গত কয়েক মাস ধরে আন্দোলনরত শিক্ষকদের এই সংগঠনের। উপাচার্য আমিনুল হক ভূইয়া একই দিনে বিকাল ৩টায় একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক ডাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়।
এরই মধ্যে উপাচার্যকে সমর্থন দিয়ে আসা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভোর সাড়ে ৫টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। আন্দোলনরত শিক্ষকরা ব্যানার নিয়ে সেখানে যান সকাল সাড়ে ৭টার দিকে। সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে উপাচার্য প্রশাসনিক ভবনের সামনে এলে ছাত্রলীগ কর্মীরা ব্যানার কেড়ে নেয় এবং শিক্ষকদের গলা ধাক্কা দিয়ে এবং মারধর করে সরিয়ে দেয়। এ ফাঁকে উপাচার্য ভবনে ঢুকে দোতলায় নিজের কার্যালয়ে চলে যান। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান খানকে এ সময় একটু দূরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
উপাচার্যপন্থী হিসেবে পরিচিত প্রক্টর অধ্যাপক কামরুল হাসান ও ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক রাশেদ তালুকদারও এ সময় দূরে দাঁড়িয়েছিলেন। তবে তারা কেউ ছাত্রলীগ কর্মীদের ঠেকানোর চেষ্টা করেননি।
জালালাবাদ থানার ওসি আক্তার হোসেন দুই পক্ষের মাঝখানে দাঁড়িয়ে হাত জোড় করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও ছাত্রলীগ কর্মীদের কাছে পাত্তা পাননি তিনি।
শিক্ষকদের ওপর হামলাকারীরা এ সময় স্লোগান দেন- ‘শাবিপ্রবির মাটি ছাত্রলীগের ঘাঁটি’।
উপাচার্য ভেতরে ঢুকে যাওয়ার পর ছাত্রলীগ কর্মীরা শিক্ষকদের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে নতুন করে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তাদের ধাক্কায় অধ্যাপক ইয়াসমিন হক মাটিতে পড়ে যান। এক ছাত্রলীগ কর্মীকে এ সময় এক শিক্ষকের গায়ে লাথি মারতেও দেখা যায়।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের নেতা অধ্যাপক সৈয়দ সামসুল ইসলাম পরে বলেন, আমাদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা করেছে। আমাদের অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। উপচার্য ছাত্রদের আমাদের ওপর লেলিয়ে দিয়েছে। তিনি নিজে এবং অধ্যাপক ইয়াসমিন হক ছাড়াও মারধরের শিকার শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনূস, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গণি, অধ্যাপক এ ন ক সমাদ্দার, মোস্তফা কামাল মাসুদ, সহযোগী অধ্যাপক মো. ফারুক উদ্দিন।