টেনিসের ব্যাড বয় আর সাতাশ বছরের ইতিহাস

টেনিসের ব্যাড বয় আর সাতাশ বছরের ইতিহাস

দু’হাজার পনেরো যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের ড্র হওয়া মাত্র একটা-দুটো নয়, তিনটা ক্যাচলাইন ধাক্কা মারছে টেনিসমহলে!

আগেভাগে কোনো মহাঅঘটন ঘটে না গেলে কোয়ার্টার ফাইনালেই মুখোমুখি হবেন দুই মেগাতারকা- বিশ্বের এক নম্বর jnaslkdmasdজকোভিচ বনাম চোদ্দো গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী নাদাল। বর্তমান খারাপ ফর্মের জন্য যিনি ফ্লাশিং মেডোয় এবার অষ্টম বাছাই হয়ে শেষ আটেই শীর্ষ বাছাইয়ের সামনে পড়ায় গেরোয় পড়েছেন। যদিও বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ এই নাদালকে ফেভারিটদের ঘাড়ে উঠব-উঠব এক ষাঁড় বলে মনে করছেন! যে কিনা প্রত্যাশিত দৃশ্যপট আচমকা ঘেটে দিতে পারে। ফেভারিটেরই বরং গেরো হয়ে দাঁড়াতে পারে।

দ্বিতীয়টা একটা জ্বলন্ত প্রশ্ন- সেরেনা উইলিয়ামসের ক্যালেন্ডার গ্র্যান্ড স্ল্যাম আটকানোর কেউ আছে কি? না হলে বিশ্ব টেনিস সাতাশ বছর পরে (’৮৮-তে স্টেফি গ্রাফ) প্রথম ক্যালেন্ডার গ্র্যান্ড স্ল্যামের বিরল ঘটনার সাক্ষী থাকবে ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫-এ নিউইয়র্কের আর্থার অ্যাশ সেন্টার কোর্টে। যে দিন মেয়েদের সিঙ্গলস ফাইনাল।

এ বছরের প্রথম তিনটে গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন সেরেনার যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ড্র দেখলে সাদা চোখে মনে হবে, শীর্ষ বাছাই কঠিন সূচি পেয়েছেন। যেমন তৃতীয় রাউন্ডেই সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ সতীর্থ মার্কিন স্লোয়ান স্টিফেন্স। যাঁর কাছে দু’বছর আগেই অস্ট্রেলীয় ওপেনে হেরেছিলেন সেরেনা। এবং যিনি চলতি মাসেই তার প্রথম ডব্লিউটিএ খেতাব ওয়াশিংটন থেকে তুলে ফর্মে থাকার প্রমাণ রেখেছেন। চতুর্থ রাউন্ডে সেরেনার লড়াই আর এক প্রতিভাবান দেশোয়ালি ম্যাডিসন কিসের সঙ্গে। এ বছরই যিনি অস্ট্রেলীয় ওপেনে সেমিফাইনাল পর্যন্ত উঠেছেন। সেরেনার কোয়ার্টার ফাইনাল ‘অল উইলিয়ামস ম্যাচ’। কারণ সব ঠিকঠাক এগোলে শেষ আটে সেরেনা বনাম ভেনাস পারিবারিক লড়াই। মনে রাখতে হবে বড় বোনকে এবারের উইম্বলডনেই সেরেনা হারালেও ভেনাস কিন্তু সাতটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার অভিজ্ঞতায় ভরপুর। সেমিফাইনালে তো সেরেনার সামনে তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী শারাপোভা। যেহেতু এই মুহূর্তের র্যাঙ্কিং অনুযায়ী সিমোনা হালেপ ফ্লাশিং মেডোয় দ্বিতীয় এবং শারাপোভা তৃতীয় বাছাই হয়ে পড়ায় এমন অপ্রত্যাশিত সেমিফাইনাল লাইন-আপ! এ ছাড়াও সূচির অন্য দিকে হালেপের সঙ্গে আছেন ওজনিয়াকি এবং আজারেঙ্কার মতো বড় নাম। কিন্তু ২১ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী, শেষ তিন বারের যুক্তরাষ্ট্র ওপেন চ্যাম্পিয়ন সেরেনার সামনে যে এ বছরটায় কোনও নামই বড় নাম নয়! বরং মাত্র ২৯ দিন পর চৌত্রিশে পা দিতে চলা সেরেনার সামনে স্টেফির জোড়া ইতিহাস ছোঁয়ার মহা ডাক-ক্যালেন্ডার গ্র্যান্ড স্ল্যাম এবং আর ওপেন যুগে সর্বাধিক ২২ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়!

তিন নম্বর ক্যাচলাইনটা আবার বিতর্কমূলক! যেহেতু পুরুষ সিঙ্গলসে অন্যতম ফেভারিট অ্যান্ডি মারের প্রথম রাউন্ড পড়েছে টেনিসের ব্যাড বয় নিক কির্গিওসের বিরুদ্ধে। যে ম্যাচকে এখন থেকেই ‘পপকর্ন ম্যাচ’ বলা হচ্ছে মার্কিন মিডিয়ায়। মুখ খারাপ করতে সিদ্ধহস্ত বিশ বছরের অস্ট্রেলীয় তরুণের ঘাড়ে এ মাসেই মন্ট্রিয়লে ওয়ারিঙ্কা-কাণ্ডের জেরে সার্কিট থেকে এক মাসের নির্বাসন আর মোটা ডলারের জরিমানা ঝুলছে। গ্র্যান্ড স্ল্যামে দু’টোর কোনওটাই প্রযোজ্য নয় বলেই কির্গিওসকে নিউ ইয়র্কে দেখা যাবে। এ বছরই আরও দু’টো গ্র্যান্ড স্ল্যামে (অস্ট্রেলীয় এবং ফরাসি ওপেন) মুখোমুখি হয়েছিলেন মারে-কির্গিওস। দু’জনের হেড-টু-হেডেও মারে এগিয়ে ৩-০। কিন্তু তখন কির্গিওসের বদমেজাজ এ ভাবে প্রকাশ্য হয়নি। ফলে ফ্লাশিং মেডোয় আচমকাই একটা প্রথম রাউন্ড ম্যাচ সাংঘাতিক আগ্রহ তৈরি করেছে। ম্যাচটা তিন দিন আগেই হাউস ফুল। টিকিট নিঃশেষিত। মারেকে যে ফাইনাল খেলতে শেষ আট আর শেষ চারে ওয়ারিঙ্কা এবং ফেদেরারকে হারাতে হবে সে সব এই মুহূর্তে কারও যেন মাথাতেই নেই!

হয়তো মাথায় নেই আরও এক জনের কথাও। তিনি ফেদেরার দ্বিতীয় বাছাই হিসেবে ড্রয়ের নীচের অর্ধ থেকে অন্তত সেমিফাইনাল পর্যন্ত স্বচ্ছন্দে এগোবেন বলেই ধরে নিচ্ছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। হয়তো সে কারণেই চৌত্রিশেও গ্র্যান্ড স্ল্যামে দ্বিতীয় বাছাই এবং বড় ফেভারিট হয়েও ফেদেরার আলোচনার বিষয় নয়।

আরও মজার, গতবারের চ্যাম্পিয়নই বলে দিয়েছেন, এবার ট্রফি ফেদেরার আর জকোভিচের মধ্যে কারও। ‘‘ড্রয়ের উপরের হাফে নোভাক আমার বাজি। আর ফেদেরার এমন এক জন, যে টুর্নামেন্ট খেলে সেখানেই ফেভারিট,’’ বলে দিচ্ছেন মারিন চিরিচ। দু’হাজার চোদ্দো যুক্তরাষ্ট্র ওপেন চ্যাম্পিয়ন।– ওয়েবসাইট।

Featured খেলাধূলা