প্রবীণ রাজনীতিবিদ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমদের (৭৬) তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে। শুক্রবার বাদ জুমা এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে সকাল আটটায় টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে তার প্রথম জানাজা এবং বেলা ১১টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম জানাজার আগে সকাল থেকেই টঙ্গী এলাকার শত শত লোক ইজতেমা মাঠের উত্তর পাশের ছাপড়া মসজিদে জড়ো হতে থাকেন। সকাল পৌনে আটটার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির নেতা কাজী জাফরের মরদেহ সেখানে পৌঁছায়। এ সময় সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সকাল সাড়ে আটটার দিকে শেষ হয় এ জানাজা।
সাবেক শ্রমিক নেতা ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য হাসানউদ্দিন সরকারের বলেন, “কাজী জাফরের সঙ্গে তার পরিচয় পাকিস্তান আমলে। টঙ্গী থেকেই কাজী জাফরের শ্রমিক নেতৃত্বের উত্থান। তিনি পাকিস্তান আমলে টঙ্গী শিল্প এলাকায় শ্রমিক নেতৃত্ব দিয়ে শ্রমিকদের দাবি ও অধিকার আদায়ে সোচ্চার ছিলেন।”
স্থানীয় আহসান উল্লাহ সরকার ইসলামিক ফাউন্ডেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার মসজিদের ইমাম সাইদুর রহমান তার জানাজায় ইমামতি করেন। এতে সাবেক সাংসদ গোলাম সারোয়ার, জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুজিবুর রহমান, স্থানীয় বিএনপির নেতা আফজাল হোসেন কায়সার, আহম্মদ আলী রুশদী প্রমুখ অংশ নেন।
পরে বেলা ১১টার দিকে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয় এবং বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে তার তৃতীয় জানাজা হয়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, কাজী জাফর দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, কিডনির রোগসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। গতকাল সকালে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে তাকে দ্রুত গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কাজী জাফরের জন্ম ১৯৩৯ সালের ১ জুলাই কুমিল্লার চিওড়া কাজীবাড়িতে। ষাটের দশকের শুরুতে তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তী সময়ে শ্রমিক রাজনীতিতে যুক্ত হন। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সদস্য হিসেবে ভূমিকা রাখেন। তিনি জিয়াউর রহমানের আমলে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। পরে সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হন।
এরশাদের সঙ্গে মতবিরোধের জের ধরে ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর আলাদা জাতীয় পার্টি গঠন করেন এবং গত বছরের ২৫ জানুয়ারি বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে যোগ দেন।