ধারাভাষ্যকার উঁচু গলায় মাইকে বলে যাচ্ছেন, এবার তুলে মেরেছেন। ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন ফিল্ডার। কিন্তু উপস্থিত দর্শকরা দেখেছেন, বলটা আসলে ফিল্ডারের হাত থেকে ফসকে গেছে। এক পায়ে দৌড়ে আসা ফিল্ডার ঝুঁকে তালুবন্দী করা বলটা ধরে রাখতে পারেননি।
এরা কেউ শারীরিকভাবে পরিপূর্ণ নন। শরীরের যে কোনো একটা অঙ্গ তাদের নেই। তারপরও অদম্য। ক্যাচ ধরছেন, দৌড়ে চার ঠেকাচ্ছেন, সজোরে শট খেলছেন, বল করে বোল্ড করছেন, ক্ষিপ্রতার সঙ্গে বল থ্রো করছেন। মানে শারীরিক অক্ষমতা করে চ্যালেঞ্জ করে ক্রিকেট যুদ্ধ জয়ের নেশায় সর্বস্ব নিংড়ে দিচ্ছেন। মনের শক্তি, অকুতোভয় চিত্তের লড়াইয়ে এরা বলীয়ান। শারীরিক প্রতিবন্ধী ক্রিকেটার তারা।
শুক্রবার (২৮ আগস্ট) মিরপুরের বিসিবি একাডেমি মাঠে আমেরিকান দূতাবাস ও ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (পিডিএফ) যৌথভাবে আয়োজন করে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ। সিক্স-এ-সাইড ম্যাচে গাজীপুর ওয়ারিয়র্স ১৬ রানে জয় পায় ঢাকা এভেনজার্সের বিপক্ষে। প্রথমে ব্যাট করে গাজীপুর ওয়ারিয়র্স ৬৫ রান করে। জবাবে ৪৯ রানে গুটিয়ে যায় ঢাকা এভেনজার্স।
প্রীতি ম্যাচে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া ব্লুম বার্নিকাট। এ সময় বিশেষ অতিথি হয়ে মাঠে উপস্থিত থেকে খেলা উপভোগ করেন মাহমুদউল্লাহ।
শারীরিক প্রতিবন্ধী ক্রিকেটারদের অফুরন্ত মনোবল, প্রাণান্ত চেষ্টা দেখে উদ্দীপ্ত জাতীয় দলের ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরিয়ান প্রেরণা পাচ্ছেন, অনুপ্রাণিত হচ্ছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী ক্রিকেটারদের নৈপুণ্য দেখে। ম্যাচ শেষে মাহমুদউল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, “খুবই ভালো লাগছে এখানে থাকতে পেরে। তাদের খেলা দেখে আমাদের অনুপ্রেরণা নেওয়া উচিত, যাতে করে আগামীতে আরও ভালো করা যায়।”
তিনি আরও যোগ করেন, “খেলার মাঝে তাদের সক্রিয়তা আমাকে অবাক করেছে। এমন এক উদ্যোগের সঙ্গে থাকতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত।”