বাংলাদেশ ও চীনের পারস্পরিক স্বার্থে পণ্য বৈচিত্র্যকরণ ও রফতানি বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে চীন ৩৫ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে চায়। চীনের সফররত বাণিজ্যমন্ত্রী গাও হুচেন মঙ্গলবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহের কথা জানান। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, চীনের মন্ত্রী বাংলাদেশ ও এ দেশের জনগণকে তার দেশের উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করেন। চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ সমন্বয় করতে একটি কমিটি গঠন করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি ড. আবদুস সোবহান গোলাপ উপস্থিত ছিলেন।
গাও হুচেন বলেন, বাংলাদেশ খুবই মানসম্পন্ন পাটজাত পণ্য উৎপাদন করে। চলতি বছরের প্রথমার্ধে বাংলাদেশ থেকে চীনে পাটজাত পণ্যের রফতানি ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, ঢাকার অদূরে পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশীপ এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণে দু’দেশের মধ্যে একটি বিনিময় নোট স্বাক্ষরিত হয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ বজায় রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তাঁর গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। চীনের মন্ত্রী ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চীন সফরের কথা স্মরণ করে বলেন, ওই সফরের মধ্যদিয়ে দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের ভিত্তি রচিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বকে বাংলাদেশ খুবই মূল্য দিয়ে থাকে। তিনি বলেন, ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা ক্রয় সহযোগিতাসহ দু’দেশের সম্পর্ক খুবই শক্তিশালী। আঞ্চলিক যোগাযোগ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঢাকা বাংলাদেশ-চীন- ভারত-মায়ানমার (বিসিআইএম)-এর মধ্যে যোগাযোগ জোরদারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
বাংলাদেশের পোশাক খাতে চীনের বিনিয়োগ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার চীনের অর্থনৈতিক ও শিল্পাঞ্চলের জন্য চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় ভূমি বরাদ্দ করেছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী যৌথ উদ্যোগে পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, তাঁর সরকার স্থানীয় বিনিয়োগের পাশাপাশি বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে ২২টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগের বিপুল সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, এ বছর ২ দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪০তম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য বাংলাদেশ চীনের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাবে। এ অনুষ্ঠান দুই দেশের সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।