চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ তরুণীকে গণধর্ষণের দায়ে সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।
বিচারক মো. রেজাউল করিম সোমবার বিকেলে ১৯৯৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর চন্দনাইশ থানায় করা মামলায় এ রায় দেন।
দণ্ডিতরা হলেন— বদর রহমান, দেলোয়ার হোসেন, কামাল উদ্দিন, রিয়াজুর রহমান, আব্দুল মালেক, মোক্তার হোসেন ও শামসুদ্দিন। আসামিদের মধ্যে প্রথম চারজন হাজতে থাকলেও বাকি তিনজন এখনও পলাতক রয়েছেন। এ ছাড়া মামলায় আক্তার হোসেন নামে এক আসামি মারা যান।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গণধর্ষণের শিকার তরুণীর পরিবার নগরীর চকবাজার মুন্সি পুকুর পাড় এলাকায় বসবাস করতেন। ১৯৯৭ সালের ২২ ডিসেম্বর ওই তরুণী তার মা ও ছোট বোনকে নিয়ে বাসে করে সাতকানিয়ায় খালার বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। বাসটি চন্দনাইশ উপজেলার আরাকান সড়কের দেওয়ানহাট এলাকায় যাবার পর চালকের সহকারী রিয়াজুর রহমান যাত্রীদের জানায় বাসটি সাতকানিয়ায় যাবে না। তাই যাত্রীদের নেমে অন্য গাড়িতে যাবার জন্য বলা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তরুণী তার মা ও বোনকে নিয়ে দেওয়ানহাট এলাকায় আরেকটি বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
এ সময় বাসচালকের সহকারী রিয়াজুর রহমান কয়েক বন্ধুসহ এসে তাদের বাসে তুলে দেয়ার কথা বলে সামনের দিকে নিয়ে যায়। পরে তারা জোর করে দেওয়ানহাটের অদূরে খাগরিয়ার ফসলের ক্ষেতে নিয়ে মা ও ছোট বোনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে তাদের সামনেই রিয়াজুরসহ মোট আটজন মিলে ভোর পর্যন্ত তরুণীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
ধর্ষণের ঘটনায় ২৪ ডিসেম্বর ওই তরুণী বাদী হয়ে চন্দনাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আটজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত করে ১৯৯৮ সালের ১৬ জুন আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। একই বছরের ১৮ অক্টোবর আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
মামলায় ১৫ সাক্ষীর মধ্যে ১০ জন সাক্ষ্য দেন। পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট জেসমিন আক্তার জানান, সর্বমোট সাত আসামির বিরুদ্ধে ১৯৯৫ সালের বিশেষ বিধান আইনের ৬ (৩) ধারায় রাষ্ট্রপক্ষে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।