সবকিছুকে হারিয়ে টিকে থাকার লড়াইয়ের এক নজির যেন সে!
মাগুরা জেলায় সরকার সমর্থিত ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সংঘর্ষে, মায়ের গর্ভে গুলিবিদ্ধ শিশু সুরাইয়াকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে আজ।
চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুটির শারীরিক অবস্থা এখন সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ায় তাকে হাসপাতাল ছাড়ার ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান ডক্টর আশরাফুল হক বিবিসিকে বলেছেন, “শিশু সুরাইয়াকে এখন সম্পূর্ণ সুস্থ স্বাভাবিক একটি শিশু বলা যায়। গত কয়েকদিনে তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছে। আজ বিশেষ মেডিকেল বোর্ড তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে হাসপাতাল ছাড়ার অনুমতি দিয়েছে।”
হাসপাতালে আনার পর থেকে টানা তিন সপ্তাহ শিশুদের বিশেষ পরিচর্যা ইউনিটে চিকিৎসা দেয়ার পর গত রোববার শিশু সুরাইয়াকে তার মায়ের সঙ্গে কেবিনে পাঠানো হয়।
শিশুটির বাবা বাচ্চু ভূঁইয়া টেলিফোনে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন আজই তারা শিশু সুরাইয়া এবং তার মাকে নিয়ে মাগুরায় তাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।
তবে চিকিৎসক আশরাফুল হক জানিয়েছেন, শিশুটির শারীরিক সমস্যাগুলো সার্জারির মাধ্যমে সমাধান হলেও, তার চোখে গুলি লাগায় যে ক্ষত হয়েছে সে বিষয়ে আরও চিকিৎসা প্রয়োজন রয়েছে। সেজন্য জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাগুরায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে গত মাসে মায়ের গর্ভে থাকা শিশুটি গুলিবিদ্ধ হয় এবং তার পিঠ দিয়ে বুলেট ঢুকে, বুক দিয়ে বেরিয়ে যায়।
ফলে নির্দিষ্ট সময়ের প্রায় ছয় সপ্তাহ আগেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বের করে আনতে হয় শিশুটিকে। এ কারণে তার ওজনও ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম। ঘটনাটি সারাদেশে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে।
পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। পরে তার মা নাজমা বেগমকেও একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ১৬ জন অভিযুক্তর সকলেই মাগুরা জেলা ছাত্রলীগের নেতা ও কর্মী।
পুলিশ বলছে, প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তিসহ নয়জনকে আটক করা হয়েছে এবং একজন পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। -বিবিসি