বিরল মৃত্তিকা রফতানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) অভিযোগ দায়ের করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং জাপান।
চীনের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের বিষয়টি গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি অভিযোগ করেছেন, চীন বাণিজ্য চুক্তি ভঙ্গ করেছে।
ডব্লিউটিওতে চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ এবং জাপান একসঙ্গে অভিযোগ দায়েরের ঘটনা এই প্রথম।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি চীন বিরল মৃত্তিকা রফতানির ক্ষেত্রে কোটা নির্ধারণ করেছে। এই বিশেষ ধরনের বস্তুটি হাইব্রিড কার, ফ্ল্যাট স্ক্রিন টেলিভিশন বা এমন উচ্চ প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি তৈরিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
চীন বিশ্বের মোট চাহিদার ৯৫ শতাংশেরও বেশি বিরল মৃত্তিকা উৎপাদন করে। এখন রফতানি সীমিত করার কারণে বিশ্ব বাজারে এই গুরু্ত্বপূর্ণ বস্তুটির দাম বেড়ে গেছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।
চীনের বিরুদ্ধে এই সম্মিলিত অভিযোগ দায়ের দেশটির বিরুদ্ধে এক প্রকার অবরোধ আরোপের পূর্ব লক্ষণ হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে চীন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, অতিরিক্ত খনি খননের কারণে পরিবশে বিপর্যয়ের আশঙ্কায় তারা কিছু কোটা নির্ধারণে বাধ্য হয়েছে।
চীনের শিল্পমন্ত্রী মিয়াও ওয়েই রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে বলেছেন, ডব্লিউটিওতে দায়ের করা অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়তে তার দেশ সক্রিয়ভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর কোটা নির্ধারণকে কোনোভাবেই বাণিজ্যিক বিধিনিষেধ আরোপ বলা যাবে না বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বিরল মৃত্তিকা আসলে বিরল নয়। এই উপাদান ১৭টি বিভিন্ন খনিজ ধাতুর সমন্বয়ে তৈরি হয়। এর মধ্যে থাকে- স্ক্যানডিয়াম, ইটট্রিয়াম আর বাকি ১৫টি ধাতু ল্যান্থেনাইডস বর্গের।
এগুলোর কিছু কিছু তামা বা দস্তার মতোই প্রকৃতিতে সহজলভ্য। আবার কিছু আছে সোনা বা প্লাটিনামের মতো বিরল। আর এই বিশেষ বস্তু প্রধানত দামি ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতি বছর চীনের কাছ থেকে ৪৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার মূল্যমানের বিরল মৃত্তিকা আমদানি করে থাকে।