লাখ লাখ মামলা আদালতে বিচারাধীন: আইনমন্ত্রী

লাখ লাখ মামলা আদালতে বিচারাধীন: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেছেন, বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা পুরো বিচার ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্থ করছে। মানুষ বিচার পেতে এখানে আসেন। কিন্তু কবে বিচার পেয়ে ফিরে যাবেন তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। লাখ লাখ মামলা নিম্ন আদালতে বিচারাধীন। একই অবস্থা হাইকোর্ট, সুপ্রীম কোর্ট এবং আপিল আদালতে। বিশেষ বেঞ্চ গঠন করেও মামলার নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না।

বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আয়কর ও মূসক বিষয়ক বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মন্ত্রী বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্বোধন করেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান ড. নাসিরউদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি এ কে আজাদ, আন্তর্জাতিক চেম্বার’র সভাপতি মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন আহমদ, এনবিআর’র সদস্য সৈয়দ মো. আমিনুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রোকেয়া আফজাল রহমানসহ ব্যবসায়ী নেতারা।

আইনমন্ত্রী বলেন, বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতার কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হন। তাদের সময় নষ্ট হয়। শ্রম নষ্ট হয়। তাই বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবসায়ীদের জন্য লাভজনক হবে। তবে এডিআর প্রচলিত বিচার ব্যবস্থার বিকল্প নয়। প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় আদালত রায় চাপিয়ে দেন। কিন্তু এখানে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রচলিত বিচার ব্যবস্থা নিয়ে বিদেশিরা শঙ্কিত। তারা এ কারণে বিনিয়োগ করতে চান না। এডিআর চালু হলে তারা বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন।’

একে আজাদ বলেন, গত চার বছরে সরকারের রাজস্ব আদায় দ্বিগুণ হয়েছে। আগামী চার থেকে ৫ বছরে এটি আরো তিনগুণ হবে। কিন্তু তার জন্য পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সে দায়িত্ব রাষ্ট্রের।

তিনি বলেন, এনবিআর’র মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা বাড়াতে হবে। তারা অনেক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেন না। তারা ভুল করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য এনবিআর’র উর্ধ্বতনদের মাঝে মধ্যে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসতে হবে।

একে আজাদ বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা রাজস্ব দেন। কর্মসংস্থান তৈরি করছে। কিন্তু আমাদের টাকার অপচয় হচ্ছে। নানা প্রকল্পের নামে অপচয় হচ্ছে এসব অর্থ। তখন প্রশ্ন আসে, আমরা টাকা দেবো কেন?’

ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, আয়কর প্রদান আরো সহজ করা উচিত। কর কর্মকর্তাদের বাকা চোখে তাকানো যাবে না। তাদের একই ধরনের মামলার ক্ষেত্রে একই রায় দিতে হবে।

এডিআর চালু হওয়ায় এনবিআর’র রাজস্ব আদায় বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

এনবিআর জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে বৃহৎ করদাতা ইউনিট (আয়কর), বৃহৎ করদাতা ইউনিট (মূসক), কর অঞ্চল-১ এবং ঢাকা দক্ষিণের ভ্যাট কমিশনারেটে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি চালু হলো। পরবর্তীতে সকল আয়কর ও ভ্যাট অফিসে চালু হবে।

প্রসঙ্গত, অর্থ আইনে-২০১১ রাজস্ব প্রশাসনে এডিআর’র বিধান সংযোজন করা হয়। এ আইনের অধীনে বিধি তৈরি করা হয়েছে। আইনে দুই পক্ষের মধ্যে একজন সহায়তাকারী থাকবেন। ইতিমধ্যে ১৩ জন সহায়তাকারী চূড়ান্ত করেছে এনবিআর।

বাংলাদেশ