প্রশাসনিক ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ আগের মতোই তদন্ত করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ কথা জানানো হয়। এছাড়া বিদ্যমান আইনটি সংশোধন করে ‘মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ (সংশোধন) আইন-২০১৫’ এর খসড়া চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেয়া হয়। তবে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ তদন্তের এখতিয়ার পাচ্ছে পুলিশ। মাদক চোরাচালান সংক্রান্ত অভিযোগ তদন্ত করবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং কাস্টমস সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্ত করবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এছাড়া ক্ষেত্র বিশেষে যৌথ তদন্তেরও ব্যবস্থা থাকবে। ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধন করে এ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আগে এ ধরনের সব অপরাধের তদন্ত দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের তপসিলভুক্ত ছিলো।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বলেন, এ আইনের আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকেও শক্তিশালী করা হচ্ছে। ২০১২ সালের মুদ্রাপাচ্রা আইনে ৪ থেকে ১২ বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। সংশোধিত আইনেও তা একই থাকছে। তবে শুধু অর্থদণ্ডে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। তিনি বলেন, বিদ্যমান আইনে পাচার হওয়া অর্থের কমপক্ষে দ্বিগুণ অথবা ১০ লাখ টাকার মধ্যে যেটি বেশি হবে- সেই পরিমাণ জরিমানার কথা বলা আছে। এই অংক বাড়িয়ে ১০ লাখের জায়গায় ২০ লাখ টাকা করা হচ্ছে।
মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বলেন, তদন্তকারী দলের বিধান ছিল না। এখন সেটা সৃষ্টি করা হয়েছে। কারণ মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়টা খুব জটিল। মানিলন্ডারিংয়ের অর্থে অন্য কোন অপরাধ যেমন, খুন হয়েছে ইত্যাদি, সেক্ষেত্রে যৌথ তদন্ত দলের প্রয়োজন থাকতে পারে। তিনি বলেন, যার মধ্যে হয়তো পুলিশের লোক থাকবে, এনবিআরের লোক থাকবে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোক থাকবে। কাজেই যেখানে প্রয়োজন যৌথ তদন্ত দল করা যাবে। সেই বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে সংশোধিত আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, ঘুষ ও দুর্নীতি সংক্রান্ত মুদ্রা পাচারের ঘটনা ঘটলে তা তদন্তের দায়িত্ব দুদকের হাতেই থাকবে। অন্যান্য অপরাধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থা তদন্তের দায়িত্ব নেবে। যেমন, অনেকগুলো পুলিশ করবে। যেগুলো কাস্টমস রিলেটেড সেগুলো এনবিআর করবে, যেটা মাদক দ্রব্য সংক্রান্ত, সেটা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর করবে। এটা আইনে পরিষ্কার বলে দেয়া হয়েছে। বিদ্যমান আইনে যৌথ তদন্তের বিধান না থাকলেও সংশোধনের খসড়ায় তা রাখা হয়েছে। অর্থাৎ, প্রয়োজনে একাধিক সংস্থা যৌথভাবে এ ধরনের অভিযোগের তদন্ত করতে পারবে।