রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত খালেদা জিয়ার উদ্দেশে বলেছেন, ‘৯০ দিন নয়, ৯০ সেকেন্ডও লাগবে না। এই মুহূর্তে সংসদে আসুন। আলোচনা হবে।’
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
সুরঞ্জিত বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বিষয়ে যদি আলটিমেটাম দিয়ে থাকেন। ৯০ দিন না ৯০ সেকেন্ডও লাগবে না। এই মুহূর্তে সংসদে আসুন এখনই আলোচনা হবে। এর জন্য আলটিমেটামের দরকার নেই। আমরা আগেও ডেকেছি আসেন নাই। এখনও বলছি আসুন। ভালো আইডিয়া থাকলে আসুন। খোলা বিতর্ক হবে। ভালো আইডিয়া দিলে আমরা গ্রহণ করবো।’
খালদা জিয়ার আলটিমেটাম নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘গতকাল একটা মহসমাবেশ হয়েছে। কি যে অবস্থা। মনে হয়েছে যেনো একটা বিশাল যুদ্ধ। তিনি ম্যান্ডেট দিয়েছেন, ৯০ দিনের মধ্যে দাবি না মানলে সরকার পতন ঘটাবেন। কিসের ম্যান্ডেট দিলেন? ৯০ দিনের মধ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাদ দিতে হবে এইটার? নাকি ছেলেদের বিচার বাদ দিতে হবে? ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি ফিরে পাওয়ার ম্যান্ডেট? এটা যদি হয় তাহলে বলতে চাই যুদ্ধাপরাধীদের এ সরকার ছাড়বে না। প্রতি ইঞ্চি মেপে মেপে এ সংসদ তাদের বিচার করবে। কয়েকটি বিষয়ে আমরা আপোসহীন। এ নিয়ে আপনার সঙ্গে কোনো আপোস নেই। এই যদি হয় তবে এই সংসদে দাঁড়িয়ে বলছি- যুদ্ধপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেবো না। বিচার চলছে, চলবে। এবার তাদের শাস্তি পেতেই হবে। সবাই মেনে নিয়েছেন। সারাবিশ্বের সমর্থন রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘১২ তারিখ দেখেছেন, ১৪ তারিখ দেখেন নাই। ১৪ তারিখও দেখবেন।’
সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রবীণ এই পার্লামেন্টারিয়ান বলেন, ‘প্রশাসনকে ধন্যবাদ দিতে চাই। এক বিন্দু রক্তপাত না ঘটিয়ে যেভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে এই সংসদের মাধ্যমে তাদেরকে ধন্যবাদ দিতে চাই।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরাও মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছি। আমাদেরও পোগ্রামও আছে। আমরা যেমন বিরোধীদলকে সংরক্ষণ করবো। তাদেরও দায়িত্ব রয়েছে- সরকারকে তার কাজ করতে দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আমরাও চাই। আপনিও চান । তাহলে আইন করতে হবে। রাজপথে থাকলে হবে না। সংসদে আসতে হবে। রোডমার্চ করলে হবে না।’
তিনি বলেন, ‘এখনও বলছি সংবিধানে যা আছে তার চেয়ে উন্নত কিছু থাকলে বিতর্ক হবে। আমাদের নেত্রী এ বিষয়ে খোলা মনে আছেন। সংসদ খোলামনে আছে। তবে প্রস্তাবটি অবশ্যই সংবিধানসম্মত হতে হবে। গণতান্ত্রিক হতে হবে।’
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান বলেছে, এক সেকেন্ডের জন্যও অর্নিবাচিত সরকার দেশ শাসন করতে পারবে না। আমরা সংঘাতমূলক রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা সৌহার্দ্যমূলক রাজনীতি চাই। বিরোধীদল সরকারের অংশ। আপনি সাংবিধানিক বিরোধীদল। রাজপথের বিরোধীদল নয়। সাংবিধানিক বিরোধীদল সরকার বারবার পতনের কথা বলে না। লুলা-ল্যাংড়ার কথা বলে না। আর যদি বলেন তাহলে আপনিও এর অংশ।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নোবেল বিজয়ী হওয়ায় আমরাও তাকে শ্রদ্ধা জানাই। এজন্য আমরা তাকে ফুলও দিয়ে এসেছি। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বানানোর প্রস্তাব দেন। এ নিয়ে মিডিয়া লিখলো শেখ হাসিনা ঠাট্টা করেছেন, বিরোধীদলীয় নেত্রী বলেছেন, মশকরা করেছেন। এটা ঠিক নয়। শেখ হাসিনা দূরদর্শী রাজনীতিবিদ। এক সময় আসবে যখন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট হবেন নন-আমেরিকান।’
ড. ইউনূস সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তাকে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট করার প্রস্তাব করেছেন। উনার রাজনৈতিক দূরদর্শিতা আছে বলেই এই প্রস্তাব করেছেন। আর আপনি (খালেদা) কি বললেন? তামাশা করার জন্য ওই প্রস্তাব করা হয়েছে।