বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের(বিপিএল) শুরুটা যতটা জাঁকজমকভাবে হয়েছিলো; দুই আসর যেতে না যেতেই মুদ্রার উল্টো পিঠটা দেখে নিয়েছে সবাই। শুধু ম্যাচ গড়াপেটা বাদ দিলেও সবচেয়ে বড় দুর্নীতি হয়েছে ক্রিকেটারদের পাওয়া পরিশোধ নিয়ে। বিশেষ করে দেশের শীর্ষ ক্রিকেটারদের পকেটে ঢুকেছে নামমাত্র মূল্য।
আসর চলাকালীন সময়েই সবাই জেনেছে, কোন ক্রিকেটার কতো টাকায় বিক্রি হয়েছেন। কিন্তু জানা নেই, শেষপর্যন্ত কতো টাকা পেয়েছেন তারা? খোঁজ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দেশের অন্যতম একটি পত্রিকা। অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে, পাওনার অর্ধেক অর্থও পাননি শীর্ষ ক্রিকেটাররা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদেশি ক্রিকেটারদের চেয়ে অনেক খারাপ অবস্থা দেশি ক্রিকেটারদের। নিলামে ৭০ হাজার ইউএস ডলার ভিত্তি মূল্যের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ডলারে কিনে নেয় ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস। কিন্তু হাতে পেয়েছেন মাত্র ৭১ হাজার ৩২৫ ডলার। মূল অর্থের চেয়ে এটুকু পাওয়ার পরেও বলা হচ্ছে, সাকিবই সবচেয়ে বেশি টাকা পেয়েছেন। সত্যি সত্যিই তাই।
১ লাখ ৬৫ হাজার ডলারে দুরন্ত রাজশাহীর কাছে বিক্রি হওয়া তামিম বুঝে পেয়েছেন মাত্র ৪৪ হাজার ৩২৫ ডলার। যা তাঁর ভিত্তি মূল্যের চেয়ে ২৫ হাজার ৬৭৫ ডলার কম। একই ভিত্তি মূল্যের মাহমুদ উল্লাহকে ১ লাখ ২৫ হাজারে কিনে নেওয়া চট্টগ্রাম কিংস তাঁকে দিয়েছে ২০ হাজার ২৫০ ডলার। জাতীয় দলের সীমিত ওভারের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার ভিত্তি মূল্য ছিলো ৪৫ হাজার ডলার। এরপর ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস তাকে কিনে নেয় ৯৬ হাজারে। এর মধ্যে হাতে পেয়েছেন সব মিলিয়ে ৩৩ হাজার ২১০ ডলার। টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও পাননি পুরো অর্থ। সিলেট রয়্যালসের কাছে ২ লাখ ৫ হাজার ডলারে বিক্রি হওয়া ৭০ হাজার ভিত্তি মূল্যের এই ক্রিকেটার পেয়েছেন ৪১ হাজার ৬২৫ ডলার। যদিও ১৫ হাজার ৭৫০ ডলার আবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড(বিসিবি) দিয়েছে।
এসব ক্রিকেটার তো কিছু পেয়েছেন। এমন ক্রিকেটারও রয়েছেন যারা এক টাকাও পাননি। এদের মধ্যে এনামুল হক জুনিয়র এবং নাঈম ইসলাম অন্যতম। চট্টগ্রাম কিংসের এই দুই ক্রিকেটার ৩০ হাজার ইউএস ডলার ভিত্তি মূল্যের প্রথমজন বিক্রি হয়েছিলেন ৮৫ হাজারে। একই ভিত্তি মূল্যের পরেরজনের(নাঈম ইসলাম) দাম ১ লাখ ২০ হাজার। অথচ দুজনের ভাগ্য একই। দলের হয়ে সবগুলো ম্যাচ খেলেও যাঁদের অ্যাকাউন্টে কিছুই জমা হয়নি!