তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় আসা পর্যন্ত বিরোধী দলকে অপেক্ষা করার পরামর্শ দিলেন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ।
তবে আদালতের রায় অনুযায়ী সংসদে বাতিল হয়ে যাওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় আর ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই বলেও আইনমন্ত্রী মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আদালতের আদেশে পরিষ্কার বলা আছে, ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল। সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণায় ছিলো, সুপ্রিম কোর্টের সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হবেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান।
কিন্তু আদালত তার রায়ে দুই টার্ম তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার অবজারভেশন দিলেও বিচার বিভাগকে এ ব্যবস্থা থেকে বাইরে রাখতে বলেছেন।
তিনি বিরোধী দলকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘নির্বাচনের এখনো অনেক দেরি আছে। এখনই তত্ত্বাবধায়ক সরকার আবার ঢোকানোর দাবি তুলছেন কেন?’
‘অপেক্ষা করি, দেখা যাক পূর্ণাঙ্গ রায়ে কি আসে।’ যোগ করেন আইনমন্ত্রী।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিস্টার শরিফ আহমেদ মঙ্গলবার মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি এ মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রিপোর্টার্স ইউনিটির ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সংগঠনের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপুসহ রিপোর্টার্স ইউনিটির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী গত তিন বছরে তার মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম তুলে ধরেন এবং রিপোর্টারদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়ার নাইকো, গ্যাটকো ও বড়পুকুরিয়া মামলা উচ্চ আদালতে স্থবির হয়ে থাকা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, এ মামলাগুলো দ্রুত চালু করার পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলা হবে।
অচিরেই সুপ্রিম কোর্টের আলাদা সচিবালয় করা হবে বলেও তিনি জানান।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের জায়গা থেকে সড়ক ভবন সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সড়ক ভববন সরে যাওয়ার পর এখন আর জায়গার অভাব হবে না।
হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মহামান্য রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার। তিনি এ ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি। তিনি নিজস্ব বিবেচনায় এ ব্যাপারে যা করার করে থাকেন।’
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা শুধু যে আন্তর্জাতিক অপরাধ তারই বিচার হচ্ছে না। কোনো ধর্মীয় বা রাজনৈতিক কারণে বিচার হচ্ছে না। আমরা ’৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল(আইন) সংশোধন করেছি। ’৭৩ এর আইনে এই আদালতের জন্য দুইজন বেসামরিক ও এক সামরিক ব্যক্তিকে বিচারক করার বিধান ছিলো। আমরা সংসদে সেটা সংশোধন করে সামরিক বিচারককে বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ সিভিল আদালতে পরিণত করেছি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ইতিমধ্যেই কয়েকজনের বিচার কাজ শুরু হয়েছে। বাকিদের বিচার কাজ দ্রুতই শুরু হবে। এ মাসের মধ্যে আরেকটি নতুন ট্রাইব্যুনাল হচ্ছে।’
বিরোধী দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে যানবাহন বন্ধ করা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মালিকরা যদি রাস্তায় গাড়ি নামাতে ভয় পান, নিজের থেকে গাড়ি বন্ধ রাখেন তাহলে সরকারের কি করার আছে?’