কি বলতে কি বলে ফেলবে, শেষে মহা কেলেঙ্কারি। তারচেয়ে বরং কথা না বলে থাকতে পারলেই ভালো। পাকিস্তান দলকে জড়িয়ে যে হারে ম্যাচ পাতানো খবর প্রকাশ হয়েছে, তাতে করে কথা বলতে যাওয়াটাও বিপদ।
খেলোয়াড়দের তো দিচ্ছেই না, তাদের প্রধান কোচ ডেভ হোয়াটমোরকেও মিডিয়া থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। হোয়াটমোর ইশারায় জানিয়ে দেন, তার মুখে লাগাম পড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনো কিছু বলতে বারণ।
ভারতীয় পত্রিকা ‘দি সানডে টাইমসে দুই দিন আগে খবর বেরিয়েছে, ‘২০১১ সালের বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার সেমিফাইনাল ম্যাচ পাতানো ছিল। আইসিসি তদন্তেও নেমেছে।’ যদিও সোমবার রাতে আইসিসি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দি সানডে টাইমসের খবর ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। আইসিসি থেকে কোনো ধরণের তদন্ত হচ্ছে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হারুন লরগাত।
তাহলে পাকিস্তান দলের ভয়টা কোথায়? হতে পারে তাদের ক্রিকেটারদের সব ধরণের বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখার চেষ্টা করছেন দলের কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যকার উদ্বোধনী ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে তাদের ম্যানেজার নাভিদ আকরাম চিমা অনুরোধ করলেন প্রশ্নগুলো এশিয়া কাপ এবং খেলা কেন্দ্রিক রাখার জন্য।
আসলে পাকিস্তান দল যেখানেই যায় সেখানেই বিতর্ক রেখে আসে। তাদের ওপেনার নাসির জামশেদের বিরুদ্ধেও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ আছে। সন্দেহভাজন ফিক্সার পাকিস্তানি নাগরিক সাজিদ খান বাংলাদেশে হাজত বাস করছেন। আদালতে ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাবাস করতেই হবে। সাজিদের কাছ থেকে কি ধরণের তথ্যপ্রমাণাদি পাওয়া গেছে, গোয়েন্দা সংস্থা তা প্রকাশ করেনি। তবে তাকে আটকের পর বিসিবির নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে অনেক তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এরপরই না সাজিদকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওই পাকিস্তানি নাগরিকের কাছে নাসির জামশেদের সেলফোন নম্বর এবং ব্যাংক একাউন্টের হিসেব নম্বর পাওয়া গেছে। বিপিএলে নিয়োগকৃত আকসুর সদস্যরা নাসির জামশেদকে জিজ্ঞাসাবাদও করেন। এখন সে ঘটনাগুলো আড়ালে চলে গেছে। পাকিস্তানের ওই ক্রিকেটার দিব্যি এশিয়া কাপে খেলছেন।
বর্তমানে জোরেসোরে আলোচনায় এসেছে ভারত-পাকিস্তানের সেমিফাইনাল ম্যাচ। ইংল্যান্ডে স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ তিন ক্রিকেটারকে জেলে যেতে হয়। তরুণ পেসার আমের খান ছয় মাস হাজত বাসের পর মুক্ত হয়েছেন। বাকি দুই সদস্য সালমান বাট ও মোহাম্মদ আসিফ ইংল্যান্ডের কারাগারে। আমের ছাড়া পেলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ। সেজন্যই ক্রিকেটে ম্যাচ গড়াপেটা এবং স্পট ফিক্সিংয়ের কথা উঠলে সবার আগে আলোচনায় আসে পাকিস্তানের নাম। এত কিছুর পরও পাকিস্তান দলে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে খেলোয়াড়দের সব ধরণের বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখার জন্য। এরপর পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা সংবাদ মাধ্যমে অবাধে কথা বলেন কি করে।