শেরেবাংলা দু`হাত ভরে দেয় কোহলিকে

শেরেবাংলা দু`হাত ভরে দেয় কোহলিকে

মনে মনে একটা জেদ নিশ্চয়ই ছিলো প্রতিশোধন নেওয়ার। যাদের জন্য অস্ট্রেলিয়া সিবি সিরিজের পার্ট চুকাতে হয় ভারতকে, এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে সেই শ্রীলঙ্কার সঙ্গেই দেখা। গৌতম গম্ভীর আর ভিরাট কোহলি জ্বলে উঠলেন আর ভারত ৫০ রানের জয় পেলো।

গম্ভীরের সাথে শতকের শতকের জন্য ইনিংস ওপেন করেছিলেন সচিন টেন্ডুলকার। ছয় রান হতে সুরাঙ্গা লাকমাল বাঁধা হলেন। নিরাশ হয়ে সাজঘরে ফিরলেন সচিন। দ্বিতীয় জুটিতে যা হলো তা ভারতের জন্য স্পেশাল।

গৌতম গম্ভীর আর ভিরাট কোহলির দারুণ একটা জুটি হয়। ২০৫ রানের জুটি। ভারতের ইনিংসের ভিত তৈরি হয় তাদের ব্যাটে। বাকিরা যে দলকে শোভন স্কোরে নিয়ে যেতে পারবে, এতে কোন সন্দেহ ছিলো না। গম্ভীর কাটায় কাটায় ১০০ রান করেন ১১৮ বলে। সাতটি চার থাকলেও কোন ছয় নেই তার ইনিংসে। ক্রিজে কতটা সতর্কই না ছিলেন গম্ভীর। শতকের পর ফারভিজ মারুফের একটি বল তুলে মারলে থারাঙ্গার হাতে ধরা পড়েন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

কোহলিও শতকের পর ইনিংসটা শেষ করে আসতে পারেননি। ১২০ বলে ১০৮ রান নিয়ে মারুফের শিকার তিনিও। কাকতালীয় হলেও কোহলির ইনিংসে কোন ছয় নেই। তিনিও সাতটি চারের মার মেরেছেন। এই দু’জনের শতকের আরও মিল আছে। উভয়ে দশম ওয়ানডে শতক পেলেন একই ম্যাচে। ভারতের সহ-অধিনায়ক কোহলির জন্য শতকটি গম্ভীরেরটির চেয়েও বেশি স্পেশাল। পর পর দুই ম্যাচে তার শতক হলো। আর প্রতিপক্ষ সেই শ্রীলঙ্কা। অস্ট্রেলিয়ার সিবি সিরিজের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শতকটা পেয়েছিলেন তিনি।

গম্ভীর নবম শতকটি হাঁকিয়েছিলেন ২০১০ সালের ৪ ডিসেম্বর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। দশমটি পেতে অপেক্ষা করতে হয় ২০১২ সালের ১৩ মার্চ পর্যন্ত। মাঝে তিনি ৯০`র ঘরে আটক হয়েছেন চার বার। মজার বিষয় গম্ভীর সহ-অধিনায়কের পদ হারিয়ে আর কোহলি ওই পদে আসিয়ান হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন। উভয়েই জয়ের নায়ক।

এই মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চারটি ওয়ানডে খেলেছেন কোহলি। তার তিনটিতে শতক আছে। দুটি আবার বাংলাদেশের বিপক্ষে। একটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ, অন্যটি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে। তার কাছে বাংলাদেশের এই মাঠ স্পেশাল হওয়ারই কথা,‘এটা আমার জন্য পয়া মাঠ। আমি এখানে রান করি। উইকেটটা ভালো। যে কোন ব্যাটসম্যান এখানে খেলতে পছন্দ করবে। প্রথম দিকে স্লো থাকলেও ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যায়। আর গম্ভীরের সঙ্গে আমার বোঝাপড়াটা ভালো হয়। ওয়ানডেতে তৃতীয়বার আমরা ২০০ রানের জুটি গড়লাম।’ ওহ শেরেবাংলায় গম্ভীরেরও এটি তৃতীয় শতক। আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পঞ্চম।

শ্রীলঙ্কা জবাব দিতে নেমে ঠিক পথেই এগোচ্ছিলো। মাহেলা জয়াবর্ধনে ৭৮ রান হওয়ার পর ইরফান পাঠানের অফ সাইডের বলে কানেক্ট করতে না গেলে, হয়তো অন্যরকম হতে পারতো। কুমার সাঙ্গাকার ৬৫ রান নিয়ে সাজঘরে ফিরে যাওয়ায় তাদের কোন ব্যাটসম্যান আর জুড়ি গড়ে তুলতে পারেনি। নিয়মিত উইকেট হারিয়ে ২৫৪ রানে অল-আউট শ্রীলঙ্ক। পরে ব্যাট করতে যাওয়ার সুবিধাটা তো তারা পেলোই না উল্টো ভারতের বোলারদের চোখরাঙানি দেখতে হলো। দারুণ বল করেছেন ইরফান পাঠান (চার উইকেট), ভিনয় কুমার (তিন উইকেট) ও অশ্বিন (তিন উইকেট)।

অস্ট্রেলিয়া থেকে ক্লান্তি নিয়ে ঢাকায় এসেছে শ্রীলঙ্কা। দুই দিনের বিশ্রামে জড়তা কাটলেও চোট তাদের সেরা একাদশে ভাঙ্গন ধরিয়েছে। তারওপর ভারতের গম্ভীর ও কোহলী অমন ইনিংস খেললে কি করার থাকে। সংবাদ সম্মেলনে মাহেলা বললেন,‘তাদের ওই জুটিটাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। আমরা ১০ থেকে ১৫ রান বেশি দিয়েছি। ক্যাচ ফেলেছি। এরচেয়ে অনেক ভালো ফিল্ডিং সাইড আমরা। তারপরেও আমি বলবো এটা দলীয় খেলা। একক কোন খেলোয়াড়কে আমি দোষ দেবো না।’

খেলাধূলা