আত্মহত্যার অনুমতি চাইলেন ২৫ হাজার কৃষক

আত্মহত্যার অনুমতি চাইলেন ২৫ হাজার কৃষক

বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছে আত্মহত্যার অনুমতি চাইলেন ২৫ হাজার কৃষক। সরকার কর্তৃক ভর্তুকি প্রদান বিষয়ে টানা সতেরো বছর ধরে কোনো a34rwসুরাহা না হওয়ায় আগামী ১৫ আগস্ট মথুরা রাজ্যের ২৫ হাজার কৃষক একসঙ্গে আত্মহত্যা করবেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।

মথুরার গোকুলে ভারত সরকার কৃষকদের জমির কোনো ব্যবস্থা না করেই তৈরি করেছিল গোকুল ব্যারেজ। এই ব্যারেজ তৈরির ফলে মথুরার কৃষকদের প্রায় ৭০০ একর জমি পানিতে রাতারাতি তলিয়ে যায়। এবিষয়ে ১৯৯৮ সালে মথুরার মোট ১১টি গ্রামের কৃষকেরা ব্যারেজ প্রশ্নে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। কিন্তু টানা সতেরো বছর পার হয়ে গেলেও আদালতের পক্ষ থেকে এবিষয়ে কোনো সুরাহা দেয়া হয়নি।

রাষ্ট্রীয় সমাজসেবক সংঘের একটি অংশ হলো ভারতীয় কৃষক সংঘ। ব্যারেজের কারণে হারিয়ে যাওয়া জমির ব্যাপারে আন্দোলন করায় গত বছরের নভেম্বরে কৃষকদের করা একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল। সংঘের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুনুয়ার নিশাদ এবিষয়ে জানান, ‘চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কৃষকরা যখন ধরনায় বসে তখন কর্মকর্তারা আগামী এক মাসের মধ্যে বিষয়টা সুরাহা করার আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু আশ্বাস কখনও পূরণ হয় না। উপরন্তু কয়েকজন ধরনাকারীর বিরুদ্ধে লুট এবং ডাকাতির মামলা দেয়া হয়েছে।’

মথুরার কৃষকরা তাই ভারতীয় কৃষক সংঘের আশ্রয়ে কোনো আশা না পেয়ে সরাসরি দেশের প্রেসিডেন্টের কাছে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যার অনুমতি চেয়ে পত্র পাঠিয়েছেন। সরকারি কর্মকর্তাদের পরিসংখ্যান মতে, ওই ২৫ হাজার কৃষকদের তাদের হারানো ৭০ একর জমির বিপরীতে ৮০০ কোটি রুপি পাওয়ার কথা ছিল। এমননি ব্যারেজ তৈরির আগে নগদ অর্থ প্রদান করার আশ্বাসও দেয়া হয়েছিল, কিন্তু ব্যারেজ তৈরির পরে সেই অর্থতো দেয়াই হয়নি। উল্টো অনেক কৃষকদের আত্মহত্যা করতে হয়েছে এই ব্যারেজের কারণে।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র মথুরাতেই তিন শতাধিক কৃষক আত্মহত্যা করেছে। ২০১৪ সালে এই আত্মহত্যার সংখ্যা ছিল ৫৬৯ জন। কিন্তু চলতি বছরের মাঝামাঝি আসতেই অনেক কৃষক মথুরাতে আত্মহত্যা করেছে। এই অবস্থা শুধু মথুরাতেই বিরাজমান নয়, মহারাষ্ট্র এবং অযোধ্যার বিশাল অঞ্চলে এই অবস্থা চলছে। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের মধ্যে আত্মহত্যা এখনও দেখা না গেলেও সরকারের উদাসীনতার কারণে অনেক কৃষকই কৃষিকাজ বাদ দিয়ে অন্য পেশায় জীবনযাপন করছেন।

আন্তর্জাতিক