বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার ও অমিমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধানে দীর্ঘ নয় বছর পর বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য সচিব পর্যায়ে বৈঠক হতে যাচ্ছে চলতি মাসেই।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যতম মহা পরিচালক মাশফি বিনতে শামস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২০০৩ সালের পর বাণিজ্য সচিব পর্যায়ে দুই দেশের মধ্যে এটাই প্রথম বৈঠক। আগামী ২৮ মার্চ থেকে নয়া দিল্লিতে দুই দিনব্যাপী এই বৈঠক দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
এ বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বাণিজ্য সচিব মোহাম্মদ গোলাম হোসেন, যার সঙ্গে থাকবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়, নৌ মন্ত্রণালয়, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, ট্যারিফ কমিশন ও বিএসটিআইয়ের ১০ জন প্রতিনিধি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, দুই দেশের বাণিজ্য চুক্তি নবায়ন, নতুন সীমান্ত হাট স্থাপন, বিনিয়োগ, স্থল বন্দর ও কাস্টমস স্টেশনের উন্নয়ন, কাঁচামালের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার মতো বিষয়গুলো নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হতে পারে।
তিনি বলেন, “প্রতিবেশী ভারতের কাঁচামাল ও বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর আমরা নির্ভরশীল। কিন্তু তারা প্রায়ই হঠাৎ করে পিঁয়াজ, চাল বা তুলার মতো পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এতে আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়।”
“অন্তত বাংলাদেশে এসব পণ্যের সরবরাহ যাতে ঠিক রাখা হয়, তা বোঝানোর চেষ্টা করবে আমাদের প্রতিনিধি দল”, বলেন এই কর্মকর্তা।
বাণিজ্য চুক্তি
বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য চুক্তির মেয়াদ আগামী ৩১ মার্চ শেষ হওয়ার প্রেক্ষাপটে এ চুক্তির নবায়ন হবে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে আলোচনার অন্যতম বিষয়।
ভারত এ চুক্তির মেয়াদ তিন বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করলেও বাংলাদেশ কোনো পরিবর্তন ছাড়াই আগের চুক্তিটির সময় আরো ছয় মাস বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ভারতের পক্ষ থেকে এ চুক্তিতে বেশ কিছু সংশোধনীর প্রস্তাব দেওয়া হলেও এ জন্য সময় প্রয়োজন হওয়ায় আপাতত চুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
১৯৭২ সালে স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য চুক্তি তিন বছর পরপর নবায়ন করার কথা।
বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রপ্তানি বাণিজ্যের পরিমাণ ৫ বিলিয়ন ডলার, যার পাল্লা অনেকাংেশে ভারতের দিকে ঝুঁকে আছে।
বাংলাদেশ গত অর্থবছরে ৫০ কোটি ডলারের পণ্য ভারতে রপ্তানি করেছে। আর আমদানি করেছে ৪০০ কোটি ডলারের পণ্য।
সীমান্ত হাট
মেঘালয় ও ত্রিপুরা সীমান্তে আরো পাঁচটি সীমান্ত হাট চালু করতে চায় বাংলাদেশ ও ভারত।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তরা জানান, মেঘালয় সীমান্তে সুনামগঞ্জে শিগগিরই নতুন একটি হাট চালু হবে। শিগগিরই এ হাটের উদ্বোধন হবে। এছাড়া ত্রিপুরা সীমান্তে আরো চারটি হাট চালুর প্রস্তাব রয়েছে।