ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের হিসারের ১০০ দলিত পরিবার ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। জমি দখল এবং ধর্ষণের ঘটনায় উচ্চবর্ণের প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার প্রতিবাদে তারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার দিল্লির যন্তর-মন্তরে ২০১৪ সালের ১৬ এপ্রিল থেকে সুবিচার চেয়ে ধর্না দিচ্ছিল। এক বছরের বেশি সময় ধরে আন্দোলনরত পরিবারের সদস্যরা শুক্রবার ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। অবশেষে গতকাল (শনিবার) তারা ইসলাম গ্রহণ করেন।
আন্দোলনরতদের দাবি ছিল, ভাগানা ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে এবং শামলাত ভূমি থেকে অবৈধ দখলদারি মুক্ত করতে হবে। এ নিয়ে তারা শুক্রবার হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টারের সঙ্গে দেখা করে দাবিও জানিয়েছিলেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস না পেয়ে তারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
ভাগানা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, সুবিচার পাওয়ার আশায় তারা মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টারের সঙ্গে চারবার দেখা করেছেন। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কাছেও অনেকবার দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হিসার প্রশাসন নীরব থেকেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ২১ মে হরিয়ানার ভাগানা গ্রামে উচ্চবর্ণের লোকদের সঙ্গে দলিতদের বিবাদ শুরু হয়। এ সময় ৫২ টি পরিবারের সদস্যরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। শামলাতে একটি জমি থেকে অবৈধ দখলদারি মুক্ত করার দাবিকে কেন্দ্র করে বিবাদের সূত্রপাত হয়। গ্রামবাসীরা দলিতদের একঘরে করে দিলে তারা গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হন। পরে ভাগানা গ্রামের ৪ দলিত নাবালিকাকে অপহরণ করে গণধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।
ভাগানা কাণ্ড সংঘর্ষ সমিতি বা বিকেএসএস’র প্রেসিডেন্ট বীরেন্দর বাগোরিয়া বলেছেন, উচ্চবর্ণের লোকেরা আমাদের মানুষ বলেই মনে করতে চায় না, তাই ওই ধর্মে থাকার আর যৌক্তিকতা কোথায়? তিনি বলেছেন, মৌলবি আব্দুল হানিফের মাধ্যমে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তারা কলেমা পড়ে নামাজ পড়েছেন বলেও জানান বীরেন্দর বাগোরিয়া।