অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না: ছাত্রলীগকে প্রধানমন্ত্রী

অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না: ছাত্রলীগকে প্রধানমন্ত্রী

pm hasinaকেউ অন্যায় করলে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না বলে ছাত্রলীগকে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যায় গণভবনে নবনির্বাচিত ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দেশকে ভালবাসার পরামর্শ দিয়ে ছাত্রনেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ছাত্রদের প্রতি মানুষের আস্থা এবং বিশ্বাস ছিল, সেটাও আবার ফিরিয়ে আনতে হবে।

নবনির্বাচিত ছাত্রলীগ নেতাদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতে নেতাকর্মীরা যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছে তার মর্যাদা দিয়ে চলতে হবে। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ অক্ষুন্ন রাখতে হবে।

ভোগের বদলে ত্যাগের মহীমায় নিজেদের তৈরি করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তোমাদের মধ্যে থেকেই উঠে আসবে আগামী দিনের নেতৃত্ব, যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। ভোগ নয়, ত্যাগের মধ্য দিয়েই নিজেদের তৈরি করতে হবে। তাহলে একজন সত্যিকার দেশপ্রেমিক, রাজনীতিবিদ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ তার আদর্শ নিয়ে চলে এবং লক্ষ্য স্থির রেখে রাজনীতি করে। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অল্প বয়স থেকেই নিজেদের তৈরি করতে হবে। নিজে কি পেলাম, না পেলাম সেটা বড় কথা নয়। দেশকে কি দিতে পারলাম, মানুষকে কি দিতে পারলাম সেটাই বড় কথা।

সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে ছাত্রলীগ নেতাদের পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংগঠন ছাড়া আসলে কোনো লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব নয়। আদর্শের ভিত্তিতে সংগঠন যত শক্তিশালী হবে, ততই দেশের উন্নতি করা সম্ভব হবে। আদর্শের প্রতি সৎ থেকে আমাদের সংগঠন গড়ে তুলতে হবে।

এসময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন-আদর্শ থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি পড়ারও পরামর্শ দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময় এদেশের মানুষকে ভালোবেসেছেন এবং অতিরিক্ত ভালোবেসেছেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। বাংলাদেশে তিনি একমাত্র নেতা যিনি সংগঠন করার জন্য মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে বলবো, পরবর্তী প্রজন্ম যেন ভুল না করে সেজন্য মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনাকে ধরে রাখবে। আর ‘আমরা বিজয়ী জাতি’ কথাটা মনে রেখে মাথা উচু করে চলবে।

শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্য-প্রযুক্তিসহ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা যদি ভোগের রাজনীতি করতাম তাহলে এটা সম্ভব হতো না। কারণ রাজনীতিটা আমাদের কাছে দেশ সেবা করার সুযোগ।

তিনি বলেন, আমরা একটা আদর্শ নিয়ে চলি। আদর্শ ও নীতি ছাড়া কোনো নেতৃত্ব গড়ে উঠতে পারে না। লোভ, লালসার ঊর্ধ্বে উঠে ত্যাগের মনোভাব নিয়ে জনগণের সেবা করতে হবে। এটাই জাতির পিতার আদর্শ।

প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ছাত্রলীগের প্রশংসা করে বলেন, সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে কোনো গণ্ডগোল ছাড়া নির্বাচনের মাধ্যমে আপনারা যেভাবে আপনাদের কাউন্সিল করে এসেছেন, এটা দেশের সামনে একটা উদাহরণ।

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন সদ্য বিদায়ী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ, নব-নির্বাচিত সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, জয়ের স্ত্রী ক্রিস্টিনা ওভারমায়ারসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাইনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, ইসহাক আলী খান পান্না, মাহবুবুল হক শাকিল, সাইফুজ্জামান শিখর, মাহমুদ হাসান রিপন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, সাজ্জাদ সাকিব বাদশাসহ বিভিন্ন জেলা ও নগর কমিটির নেতারা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

নব-নির্বাচিত নেতারা আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

রাজনীতি শীর্ষ খবর