‘১৮ মাসের মধ্যে চামড়া শিল্প সাভারে স্থানান্তর’

‘১৮ মাসের মধ্যে চামড়া শিল্প সাভারে স্থানান্তর’

বর্তমান সরকারের আমলে ১৫ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে রাজধানীর হাজারীবাগের চামড়া শিল্প সাভারে স্থানান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া।

মঙ্গলবার দুপুর ১টায় মতিঝিল শিল্পভবনের সভাকক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, সরকার হাজারীবাগের ট্যানারিগুলো পরিবেশবান্ধব স্থানে স্থানান্তরের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় বিসিক ৫শ ৪৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ‘চামড়া শিল্পনগরী ঢাকা’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

সাভারের হেমায়েতপুরে ২শ একর জায়গার ওপর এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলেও শিল্পমন্ত্রী জানান।

ইতোমধ্যে প্রকল্প এলাকার মাটি ভরাট, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, ড্রেন ও কালভার্ট তৈরি, গভীর নলকূপ, বিদ্যুৎ ও গ্যাস লাইন, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র, পানি শোধনাগার ও পানির লাইন স্থাপন, ফায়ার বিগ্রেড শেড, পুলিশ ফাঁড়ি, প্রশাসনিক ভবনসহ শিল্পনগরীর অধিকাংশ অবকাঠামো নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পের আওতায় কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) স্থাপনা না করায় হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি শিল্পের কাঙ্ক্ষিত স্থানান্তর সম্ভব হয়নি। এর ফলে রাজধানীর পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবার পাশাপাশি আমাদের সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পের রফতানি হুমকির মুখে এসে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের পর পরিবেশ সংক্রান্ত কম্পায়েন্স’র অজুহাতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বাংলাদেশ থেকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য না কেনার কথা জানিয়ে আসছে। এছাড়া হাইকোর্টও জনস্বার্থে দ্রুত হাজারীবাগের ট্যানারিগুলোকে দূষণমুক্ত পরিবেশে স্থানান্তরের নির্দেশনা দিয়েছেন।’

‘কিন্তু সিইটিপি নির্মাণ সংক্রান্ত আইনি জটিলতার কারণে এতোদিন এ স্থানান্তর প্রক্রিয়া থমকে ছিলো। সে জটিলতার বর্তমানে নিরসন হয়েছে। তাই অচিরেই আমরা এ শিল্পকে সাভারে স্থানান্তর করতে সম্ভব হবো’ বলেও তিনি জানান।

মন্ত্রী বলেন, ফেঞ্চুগঞ্জে শাহ্জালাল সার কারখানা স্থাপনের বিষয়টি দীর্ঘ দিন ধরে আলোচনা হয়ে আসছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আগামী ২৪ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে এ সার কারখানা নির্মাণের কাজ শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন সকালে শাহজালাল সার কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

তিনি বলেন, নতুন এ সার কারখানা চালু হলে প্রতিদিন ১ হাজার ৭শ ৬০ মেট্রিক টন হিসেবে বছরে ৫ লাখ ৮০ হাজার ৮শ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদন হবে। পাশাপাশি এ কারখানায় প্রতিদিন ১ হাজার মেট্রিক টন হিসেবে বছরে ৩ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন অ্যামোনিয়া উৎপাদন হবে। এটি জাতীয় পর্যায়ে সারের নিরাপদ মজুত গড়ে তুলতে বিশেষভাবে সহায়তা করবে।

মন্ত্রী জানান, শাহ্জালাল সার কারখানা স্থাপনে মোট ৫ হাজার ৪শ ৯ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে চীন সরকার ৩ হাজার ৯শ ৮৭ কোটি এবং বাংলাদেশ সরকার ১ হাজার ৪ শ ২২ কোটি টাকা যোগান দেবে।

মন্ত্রী বলেন, মহাজোট সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকেই দেশে কৃষির উৎপাদন বেড়েছে। দেশে বার বার বাম্পার উৎপাদন হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আগামী রমজানে চিনির কোনো ঘাটতি থাকবে না। চিনি আমদানির লক্ষ্যে ব্রাজিল সরকারের আমন্ত্রণে আমার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আলোচনার জন্য গত ৩ মার্চ থেকে ব্রাজিল সফর করেছে।’ আগামী রমজানে ১ লাখ টন চিনি আমদানি করা হবে বলে জানান শিল্পমন্ত্রী।

অর্থ বাণিজ্য